বোকো হারামের কবল থেকে উদ্ধার পাওয়া কয়েকশত নাইজেরীয় নারী ও শিশু জঙ্গিগোষ্ঠীটির বর্বরতার বিবরণ দিয়েছেন।
Published : 04 May 2015, 01:53 PM
সরকারি শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় পাওয়া এসব নারী ও শিশু রোববার প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমের সামনে তাদের নির্মম অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।
"আমাদের ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের সামনেই পরিবারের পুরুষ ও কিশোর ছেলেদের হত্যা করা হয়,” বলেন তারা।
সেসিলিয়া অ্যাবেল নামের এক নারীর সামনেই তার স্বামী ও বড় ছেলেকে খুন করা হয়, বাকী আট সন্তানসহ তাকে ধরে নিয়ে যায়।
"আমাদের মধ্যে অনেককেই তাদের বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়," বলেন তারা।
“দিনে মাত্র একবার খাবার দেয়া হতো,” বলেন এক নারী।
আসাবী উমারা নামে একজন জানিয়েছেন, এক মুহূর্তের জন্য তাদের নড়তে দিত না জঙ্গিরা, সবাইকে এক জায়গায় একসঙ্গে বেঁধে রাখত।
“প্রাকৃতিক কাজ সারার সময়ও চোখের আড়াল হতে দিত না,” বলেন তিনি।
“গবাদিপশু খায় এমন শুকনো ভূট্টার দানা খাবার হিসেবে দেয়া হতো, এসব খাবার হমজ করতে না পেরে অনেকে মারা যায়,” বলেন তিনি।
দুই সন্তানের জননী ২৪ বছর বয়সী উমারা বলেন, "প্রতিদিন আমরা কাউকে না কাউকে মরতে দেখতাম, আর অপেক্ষা করতাম কখন আমাদের সময় আসবে।"
“সেনাদের দেখতে পেয়ে আমরা হাত উঠিয়ে চিৎকার শুরু করি, এতে আমাদের যারা পাহারা দিচ্ছিল তারা, আমাদের দিকে পাথর ছুঁড়তে শুরু করে,” বলেন তিনি। পাথরের আঘাতে অনেকে মারা যান বলে জানিয়েছেন তিনি।
গত এক সপ্তাহে নাইজেরিয়ার উত্তরপূর্বাঞ্চলের সংরক্ষিত বনাঞ্চল সামবিসায় অভিযান চালিয়ে বন্দী প্রায় ৭শ নারী ও শিশুকে উদ্ধার করেছে নাইজেরীয় সেনাবাহিনী। উদ্ধার পাওয়া প্রায় সবাই নির্যাতনের একই ধরনের চিত্র তুলে ধরেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ।
উদ্ধার হওয়া এসব নারী ও শিশুদের পিকআপে করে ইয়োলা শহরে এনে একটি অস্থায়ী সরকারি শিবিরে রাখা হয়েছে। এদের বেশিরভাগকেই গত বছর গুমসুরি গ্রাম থেকে অপহরণ করা হয়েছিল।
তবে উদ্ধারপাওয়াদের মধ্যে গত বছর গুমসুরির কাছের গ্রাম চিবোক থেকে অপহৃত তিনশ স্কুল ছাত্রীর কেউ নেই বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
২০০৯ সালে ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিদ্রোহ শুরু করে বোকো হারাম। তারপর থেকে গোষ্ঠীটির হামলায় কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।