লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির কাছে কংগ্রেস ধরাশায়ী হওয়ার একদিন পর শনিবার মনমোহন পদত্যাগপত্র দিলেন।
২০০৪ সাল থেকে একনাগাড়ে দুই দফা বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ গণতন্ত্রের দেশটির নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। এর আগে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জাতির উদ্দেশ্যে বিদায়ী ভাষণ দেন মনমোহন।
হিন্দি ও ইংরেজিতে দেয়া সংক্ষিপ্ত ভাষণে মনমোহন বলেন, ভারতের ভবিষ্যতের ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত আশাবাদী।
নিজের সামর্থের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে দেশের সেবা করতে চেয়েছেন বলে বিদায়ী ভাষণে জানান মনমোহন।
একদশক আগের চেয়ে অনেক শক্ত ভিত্তির ওপর দেশকে রেখে যাচ্ছেন বলেও এ সময় উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, “আমি নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করি বিশ্বের নব্য অর্থনীতিতে ভারত গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখবে। ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার সংমিশ্রণ এবং বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য স্থাপন করে এই জাতি বিশ্বকে প্রাগ্রসরতার পথ দেখাতে পারে।”
“দেশকে সেবা করাই ছিল আমার অগ্রাধিকার। এর বেশি আমার আর কিছুই চাইবার ছিল না”- বলেন মনমোহন।
২০০৪ সালে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোটের সরকারে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে টানা দুই দফা ভারতের সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন মনমোহন।
তিনি বলেন, “আজ আমি যখন আমার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিতে যাচ্ছি তখন আমি ভাল করেই জানি, স্রষ্টার কাছ থেকে চূড়ান্ত বিচারের আগে জনগণের আদালতেই কর্মকর্তারা ও সরকার তাদের বিচারের ভার অর্পন করে।
আমি বিভিন্ন সময়ে বলেছি, আমার জীবন ও দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড খোলা বইয়ের মতো। আমাদের এই মহান জাতিকে সেবা করার জন্য আমি আমার সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে চেষ্টা করেছি।”
বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১০ বছর ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স ভারত শাসন করেছে। এই সময়ে দেশ অনেক কিছুই অর্জন করেছে, অনেক সাফল্য রয়েছে, যার জন্য আমরা গর্বিত হতে পারি।
তিনি আরো বলেন, “আজ ভারত সর্বক্ষেত্রেই ১০ বছর আগের অবস্থা থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী রাষ্ট্র। আর এই সাফল্যের কৃতিত্ব আপনাদের সবার।”
“আমি অফিস ছেড়ে যাচ্ছি, কিন্তু আপনাদের কাছ থেকে যে ভালবাসা ও মমতা আমি পেয়েছি চিরকাল তা আমার মনে থাকবে। আমি এই দেশের সবকিছুর প্রতি ঋণ স্বীকার করছি। দেশ বিভাগের কালে এই মহান ভূখণ্ডে আমি এক সুবিধাবঞ্চিত শিশু হিসেবে ছিলাম যে কিনা পর্যাপ্ত সুযোগ পেয়ে সর্বোচ্চ অফিস পর্যন্ত যেতে পেরেছিল।”
ভাষণের শেষাংশে তিনি বলেন, “আমি পরবর্তী সরকারের প্রতিটি ক্ষেত্রে সাফল্য কামনা করি এবং আমাদের জাতির বৃহত্তর সাফল্যের জন্য প্রার্থনা করি।”