‘সেই বিশ্বের কথা ভাবুন, যেখানে জ্ঞান মুক্ত নয়’

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে প্রস্তাবিত পাইরেসিরোধ আইনের প্রতিবাদে অনলাইনে বিশ্বের বৃহত্তম মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়ার ইংরেজি সংস্করণ ‘কালো’ হয়ে গেছে ২৪ ঘণ্টার জন্য।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Jan 2012, 00:22 AM
Updated : 18 Jan 2012, 00:22 AM
ঢাকা, জানুয়ারি ১৮ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে প্রস্তাবিত পাইরেসিরোধ আইনের প্রতিবাদে অনলাইনে বিশ্বের বৃহত্তম মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়ার ইংরেজি সংস্করণ ‘কালো’ হয়ে গেছে ২৪ ঘণ্টার জন্য।
জনপ্রিয় এই ওয়েবসাইটের প্রচ্ছদ পৃষ্ঠাজুড়ে কালোধূসর প্রেক্ষাপটে এখন শুধু উইকিপিডিয়ার লোগো, পাশে লেখা- “একটি বিশ্বের কথা ভাবুন, যেখানে জ্ঞান মুক্ত নয়।”
অবাধে তথ্য প্রাপ্তির অধিকারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল ১১টা থেকে এভাবেই প্রতিবাদমুখর হয়েছে জনপ্রিয় এই বিশ্বকোষটি।
ওয়েবসাইটে ছোট্ট এক বার্তায় তারা লিখেছে, “এক দশকের বেশি সময় ধরে আমরা মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিশ্বকোষ তৈরি করতে লাখ লাখ ঘণ্টা ব্যয় করেছি। এই মুহূর্তে, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে একটি আইন প্রক্রিয়াধীন আছে যা মুক্ত ইন্টারনেটের মারাত্মক ক্ষতি করবে। তাই এ আইনের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করতে আমরা উইকিপিডিয়ার পৃষ্ঠা (ইংরেজি সংস্করণ) আগামী ২৪ ঘণ্টার জন্য কালো করে রাখছি।”
প্রতিবাদের শক্তিতে সবাইকে সোচ্চার হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে উইকিপিডিয়া।
সোমবার রাতে অনলাইন বিশ্বকোষটির পরিচালনাকারী ফাউন্ডেশনের এক বিবৃতিতে উইকিপিডিয়ার ইংরেজি সংস্করণ ২৪ ঘণ্টা বন্ধ রাখার এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
বর্তমান ইন্টারনেট বিশ্বে উইকিপিডিয়া সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রতিদিন লাখ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এই ওয়েবসাইটির সেবা গ্রহণ করে।
বিবৃতিতে উইকিপিডিয়া ফাউন্ডেশন বলেছে, “যদি এই আইনটি পাস হয় তাহলে এটি স্বাধীন ও উন্মুক্ত ইন্টারনেটের ক্ষতি করবে এবং যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইটগুলোর বিরুদ্ধে ‘সেন্সরশিপ’ আরোপের নতুন রাস্তা খুলে দেবে।”
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ এ ‘দ্য স্টপ অনলাইন পাইরেসি অ্যাক্ট’ এবং উচ্চকক্ষ সিনেটে ‘প্রোটেক্ট ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অ্যাক্ট’ নিয়ে বিতর্ক চলছে। প্রস্তাবিত এই আইন দুটির আওতায় বহির্বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের পাইরেটেড পণ্যবিক্রি বন্ধ করতে পদক্ষেপ নিতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের চলচ্চিত্র ও সঙ্গীত শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা প্রস্তাবিত আইনটির সমর্থক। এ দু’শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা তাদের পণ্য প্রায়ই অবৈধভাবে বিক্রি হতে দেখেন। তাই ‘মেধাস্বত্ত্ব’র রক্ষা করতে প্রস্তাবিত আইনটি দরকার বলে তারা মনে করছেন।
অন্যদিকে, প্রযুক্তি শিল্পের সঙ্গে জড়িত ও মানবাধিকার কর্মীরা প্রস্তাবিত আইনটির সমালোচনা করছেন।
আইনটি প্রযুক্তি শিল্পের ক্ষতি করবে বলে দাবি করছেন এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা। আর মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, আইনটি পাস হলে এটি মানুষের বাকস্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হবে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এবি/সিআর/১২০০ ঘ.