দালাই লামা-ওবামা বৈঠকে চীনের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া

দালাই লামার সঙ্গে বারাক ওবামার বৈঠকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন, যদিও তিব্বতের স্বাধীনতার প্রশ্নে সমর্থন দেননি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। ভিডিও

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 July 2011, 02:09 AM
Updated : 17 July 2011, 02:09 AM
বেইজিং, জুলাই ১৭ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/রয়টার্স)- দালাই লামার সঙ্গে বারাক ওবামার বৈঠকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন, যদিও তিব্বতের স্বাধীনতার প্রশ্নে সমর্থন দেননি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
শনিবার হোয়াইট হাউজে তিব্বতের নির্বাসিত ধর্মীয় নেতার সঙ্গে বৈঠকে বসেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
এ বৈঠকের আগে দালাই লামার সঙ্গে বৈঠকে না বসার জন্য ওবামার প্রতি আহ্বান জানায় চীন।
চীন মনে করছে, এর মধ্য দিয়ে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ওয়াশিংটন নাক গলিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
দালাই লামার সঙ্গে ওবামা ৪৫ মিনিট বৈঠক করেন। অহিংস নীতি অবলম্বনের জন্য দালাই লামার প্রসংশা করেন তিনি। একইসঙ্গে জানিয়ে দেন, তিব্বতের স্বাধীনতাকে সমর্থন করবে না ওয়াশিংটন।
ওবামা-দালাই লামা বৈঠকের পরপরই প্রতিক্রিয়া জানায় বেইজিং। তারা বলছে, এ বৈঠকের ফলে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
দালাই লামাকে স্বাধীন তিব্বত প্রতিষ্ঠার জন্য সহিংসতাকে সমর্থনকারী বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে বিবেচনা করে চীন।
বৈঠকের পরপরই বেইজিংয়ে মার্কিন দূতাবাসের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে তলব করে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
রোববার সকালে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মা যাওজু এক বিবৃতিতে বলেন, "এ পদক্ষেপ চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অনাকাঙ্খিত হস্তক্ষেপ। এটা চীনের নাগরিকদের অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে এবং এতে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।"
দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় আবরণের আড়ালে দালাই লামা চীনকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।"
"আমাদের চাওয়া, যুক্তরাষ্ট্র বিচক্ষণতার সঙ্গে চীনের মূলনীতি ও ন্যায় সঙ্গত অবস্থানকে বুঝবে। দুদেশের সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব এড়াতে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে, চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ করবে এবং চীনের বিচ্ছিন্নতাবাদী 'তিব্বতি স্বাধীনতাকামীদের' সমর্থন দেওয়া থেকে বিরত থাকবে।"
তবে চীনের এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী দালাই লামা।
তিনি দাবি করে আসছেন, শান্তিপূর্ণ উপায়ে তিব্বতের স্বায়ত্তশাসনের জন্য তার এ লড়াই।
১৯৬৯ সালে তিব্বতে চীনা শাসনের বিরুদ্ধে এক ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর তিব্বত থেকে ভারতে পালিয়ে যান তিনি।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত অন্য এক বিবৃতিতে জানানো হয়, চীনের উপপররাষ্ট্র মন্ত্রী কুই বেইজিংয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে ওবামা-দালাই লামা বৈঠকের ব্যাপারে চীনের বক্তব্য জানাতে 'জরুরি তলব' করেন।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়, "এ ঘটনায় চীন তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছে। তিব্বত চীনের একটি অবিচ্ছিন্ন অংশ এবং তিব্বতের বিষয়টি পুরোপুরি চীনের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সুসম্পর্ক বজায় রাখতে উভয়পক্ষকেই কাজ করতে হবে।"
এদিকে বৈঠকের পর হোয়াইট হাউজের এক বিবৃতিতে বলা হয়, দালাই লামা তিব্বতের স্বাধীনতার জন্য কাজ করছেন না বলে প্রেসিডেন্ট ওবামাকে জানিয়েছেন। এছাড়া চীন সরকার ও তার প্রতিনিধিদের মধ্যকার আলোচনা খুব শিগগিরই আবার শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এবি/এএইচ/এমআই/১৪০০ ঘ.