বিবিসি জানায়, ঘানার দক্ষিণের আশান্তি অঞ্চলে হাসপাতালে সম্প্রতি ওই দুই রোগী মারা যান।
অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর দুই ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করা হয় এবং এ মাসের শুরুতে জানা যায় তারা মারবার্গ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
সেনেগালের একটি পরীক্ষাগার থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। দুই ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন সন্দেহে ৯৮ জনকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে বলেও জানিয়েছে ঘানা কর্তৃপক্ষ।
মারবার্গ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধে পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রশংসা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটি থেকে এ রোগের ছড়িয়ে পড়া রোধে ঘানার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করা হচ্ছে।
ডব্লিউএইচও-র আফ্রিকা অঞ্চলের পরিচালক ডা. মাতশিদিসো মোয়েতি বলেন, ‘‘তারা খুবই ভালো কাজ করেছে। কারণ, দ্রুত এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে মারবার্গ সহজেই হাতের বাইরে চলে যেত।”
মারবার্গের কোনো চিকিৎসা এখনও মানুষের হাতে নেই। এ রোগে আক্রান্তদের প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে বলা হয় এবং রোগীর শরীরে উপসর্গ দেখে সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেন চিকিৎসকরা। যাতের রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বাড়ানো যায়।
ফলখেকো বাদুড় থেকে মারবার্গ ভাইরাস মানবদেহে ছড়িয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে নিঃসৃত তরলের মাধ্যমে এই ভাইরাস একজনের দেহ থেকে অন্যজনের দেহে ছড়ায়।
এ রোগের মৃত্যুর হার অনেক বেশি। সাধারণত এ রোগে মাথাব্যাথা, জ্বর, গায়ে ব্যাথা, রক্তবমি এবং রক্তপাতের উপসর্গ দেখা যায়।
ঘানা কর্তৃপক্ষ লোকজনকে গুহা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। যে কোনও মাংস খুব ভালো করে রান্না করার পর তা খেতে বলেছেন।
পশ্চিম আফ্রিকায় এটা দ্বিতীয়বারের মত মারবার্গ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। গত বছর গিনিতে একজনের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গিয়েছিল।
শনাক্ত হওয়ার পাঁচ সপ্তাহ পর গত সেপ্টেম্বরে সেবারের প্রাদুর্ভাব শেষ হওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, আফ্রিকা মহাদেশে এর আগে অ্যাঙ্গলা, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, কেনিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং উগান্ডায় বিক্ষিপ্তভাবে এর রোগের প্রাদুর্ভাব হয়েছিল।
২০০৫ সালে অ্যাঙ্গলায় মারবার্গ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুইশতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। যেটা এখন পর্যন্ত এ রোগের সবচেয়ে প্রাণঘাতী প্রাদুর্ভাব।
তবে সবার প্রথম মারবার্গ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আফ্রিকার দেশগুলোতে নয় বরং জার্মানিতে হয়েছিল। ১৯৬৭ সালে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে জার্মানিতে সাত জন মারা যান।