অবশেষে সরছেন জনসন

দলের ভেতরে বিদ্রোহ, একের পর এক মন্ত্রী ও আইনপ্রণেতার পদত্যাগের মধ্যে অনিবার্য পরিণতি মেনে নিয়ে শেষ পর্যন্ত সরে যাচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 July 2022, 08:55 AM
Updated : 7 July 2022, 11:36 AM

বিবিসি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেবেন জনসন, যার মধ্য দিয়ে তার প্রধানমন্ত্রিত্বেরও অবসান ঘটবে।

তবে কনজারভেটিভরা নতুন নেতা ঠিক করার আগ পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব চালিয়ে নেবেন।

জনসন তার পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা এরই মধ্যে টোরি পার্লামেন্টারি গ্রুপ ১৯২২ কমিটির চেয়ারম্যানকে কাছে জানিয়ে দিয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

অক্টোবরে দলীয় সম্মেলনে দায়িত্ব নেওয়া নতুন নেতাই প্রধানমন্ত্রী পদে জনসনের স্থলাভিষিক্ত হবেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, দলে বিদ্রোহীদের পাশাপাশি নতুন নিয়োগ পাওয়া মন্ত্রীরাও জনসনকে ছেড়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিলে তার সরকার অনেকটাই অকার্যকর হয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে পদত্যাগ ছাড়া অন্য কোনো পথ জনসনের জন্য খোলা ছিল না।

জনসন দলে কতটা বিচ্ছিন্ন ও ক্ষমতাহীন হয়ে পড়েছিলেন, তা কেবল বৃহস্পতিবার সকালের দুই ঘণ্টায় ৮ মন্ত্রীর পদত্যাগেই বোঝা যায়। অথচ আগের দিনও পার্লামেন্টে তিনি বলেছিলেন, পদত্যাগ তিনি করবেন না।

বিবিসি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারই জনসন তার পদত্যাগের কথা ঘোষণা করবেন বলে জানা গেছে।

“বরিস জনসন আজ (বৃহস্পতিবার) কনজারভেটিভ পার্টির নেতা থেকে পদত্যাগ করবেন,” বলেছেন বিবিসির পলিটিকাল এডিটর ক্রিস ম্যাসন।

দলে কয়েকদিনের টানাপোড়েনের পর ৫৮ বছর বয়সী জনসনের পাশে এখন হাতেগোণা মাত্র কয়েকজনকে দেখা যাচ্ছে; অথচ তিন বছর আগেই তিনি বিপুল ব্যবধানে টোরিদের ক্ষমতায় এনেছিলেন, যুক্তরাজ্যের এমন অনেক এলাকাকে কনজারভেটিভদের পক্ষে নিয়ে এসেছিলেন, যেসব এলাকা ঐতিহাসিকভাবে কখনোই তাদের পক্ষে ছিল না।

তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, লকডাউনের মধ্যে বিধিনিষেধ অমান্য করে মদের পার্টি কেলেঙ্কারিসহ নানান ইস্যুতে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে জনসন সরকারের জনপ্রিয়তা যে হু হু করে নামছিল বেশ কয়েকটি উপনির্বাচনে হার তারই সাক্ষী দিচ্ছে।

দলে একদফা বিদ্রোহ সামাল দিতে পেরেছিলেন তিনি, আস্থা ভোটে টিকে নেতৃত্বের পরীক্ষায়ে উৎরে গিয়েছিলেন।

কিন্তু মঙ্গলবার ঋষি সুনাক ও সাজিদ জাভিদের পদত্যাগ যে ঝড়ের সূচনা করে, তাতে তার টিকে থাকা সত্যিই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছিল।

এমনকী বুধবার অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়া নাদিম জাহাউই-ও একদিনের মাথায় জনসনের কাছ থেকে সমর্থন তুলে নেওয়ার ইঙ্গিত দেন এবং প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে বলেন।

জনসন দলীয় প্রধানের পদ থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিলে কনজারভেটিভ পার্টিতে নেতৃত্বের লড়াই শুরু হবে; এরপর দলটির এক লাখ সদস্যের সিদ্ধান্তে নতুন নেতা ঠিক হবে।

তখন জনসন তার পদত্যাগপত্র রানিকে দিলে এলিজাবেথ ক্ষমতাসীন দলের নেতাকে ডেকে পাঠাবেন, যিনি পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন, গড়বেন নতুন সরকার।