মারিউপোলে দুই বিদেশি জাহাজ জব্দ করেছে রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা

ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলীয় বন্দর নগরী মারিউপোলে বিদেশি পতাকাবাহী দুটি জাহাজ জব্দ করেছে রাশিয়াপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। এগুলোকে এখন ‘রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি’ বলে দাবি করেছে তারা।

>>রয়টার্স
Published : 5 July 2022, 05:46 PM
Updated : 5 July 2022, 05:46 PM

রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বাণিজ্যিক জাহাজ জব্দের এমন ঘটনা এটিই প্রথম। হাতে পাওয়া দুটি চিঠির বর্ণনা সেকথাই বলছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ইউক্রেইনের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূল মারিউপোল কয়েকমাস অবরুদ্ধ থাকার পর গত মে মাসে রাশিয়া এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীর দখলে চলে গেছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেইনে আগ্রাসন শুরু করা রাশিয়া এখন দোনেৎস্ক এবং লুহান্সক অঞ্চল দখলে নেওয়ার জন্য লড়ছে।

রয়টার্সের দেখা আলাদা দুটো চিঠিতে বলা হয়েছে, ইউক্রেইনের স্বঘোষিত দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দুটো শিপিং কোম্পানিকে তাদের জাহাজগুলো বাধ্যতামূলকভাবে জব্দ করা এবং রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে রূপান্তরিত করার কথা জানিয়েছে।

এর জন্য জাহাজের মালিকদেরকে কোনও ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়নি বলে জানানো হয়েছে চিঠিতে। এ বিষয়ে দোনেৎস্ক কর্মকর্তাদের মন্তব্য জানতে ইমেইল পাঠিয়ে অনুরোধ জানানো হলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলেননি। আর অন্য কাউকেও ফোনে পাওয়া যায়নি।

রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জব্দ করা দুটো জাহাজের একটি হচ্ছে, লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী স্মার্টা জাহজ। এই জাহাজের মালিক কোম্পানি হচ্ছে- লাইবেরিয়ার নিবন্ধিত স্মার্টা শিপিং। কোম্পানিটি বলেছে, তাদের জাহাজ জব্দের কথা ইমেইলে জানানো হয়েছে গত ৩০ জুনে।

“এটি বেআইনি” এবং “সব আন্তর্জাতিক নীতি পরিপন্থি” বলে অভিযোগ করেছে কোম্পানিটি। এক বিবৃতিতে স্মার্টা শিপিং বলেছে, “সম্পত্তির অধিকারের দিক থেকে বলতে গেলে জোর করে জাহাজ জব্দ করাটা মৌলিক মানবাধিকারের লঙ্ঘন। এ ধরনের কার্যকলাপ জাহাজ চলাচল এবং সমুদ্র নিরাপত্তায় বড় ধরনের হুমকি।”

কোম্পানিটি জানিয়েছে, ইস্পাত পণ্য নেওয়ার জন্য গত ২১ ফেব্রুয়ারিতে স্মার্টা জাহাজ মারিউপোলে পৌঁছায়। পরে ২০ মার্চে জাহাজটি গোলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। জাহাজটির ১৯ জন ক্রু কে রাশিয়ার সেনারা জোর করে দোনেৎস্কে নিয়ে যায় এবং একমাস পর ছেড়ে দেয়।

রয়টার্সের দেখা চিঠির বর্ণনা থেকে আরও জানা গেছে, রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জব্দ করা আরেকটি জাহাজ হচ্ছে, পানামার পতাকাবাহী ব্লু স্টার-১।

ইউক্রেইনের ওদেসায় জাহাজটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ‘ফেতিদা মেরিটাইম’ এর এক কর্মকর্তা এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে ইউক্রেইনের নিরাপত্তা বিভাগের কাছে সব তথ্য আছে বলে জানান তিনি।

ইউক্রেইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, দোনেৎস্কে রুশ দখলদ্বার কর্তৃপক্ষ কয়েকটি জাহাজ নিয়ে একটি জাতীয় নৌবহর গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে। মারিউপোল থেকে চুরি করা জাহাজগুলোই দিয়েই এ বহর গড়া হবে বলে জেনেছেন তারা।

তাই জব্দ হওয়া জাহাজগুলোর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান ওই ইউক্রেইনীয় কর্মকর্তা।

আন্তর্জাতিক সমুদ্রবিষয়ক সংগঠন (আইএমও)’র তথ্যমতে, ইউক্রেইনের বন্দরগুলোতে আটকে আছে ৮০ টিরও বেশি বিদেশি-পতাকাবাহী জাহাজ। ওইসব বন্দরের কয়েকটি রুশ নিয়ন্ত্রণাধীনে আছে।