লুহানস্ক ছেড়ে এখন দোনেৎস্ক বাঁচাতে নজর ইউক্রেইন বাহিনীর

ইউক্রেইনের গুরুত্বপূর্ণ লুহানস্ক প্রদেশ কব্জায় নেওয়ার পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রতিবেশী দেশে অভিযান অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেওয়ায় মস্কোর সেনারা এখন সমগ্র দোনেৎস্কে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় মনোযোগী হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 July 2022, 12:27 PM
Updated : 5 July 2022, 12:27 PM

চলতি সপ্তাহে রাশিয়া ও তার মিত্ররা লুহানস্কের পূর্ণ কর্তৃত্ব নেওয়ায় ৫ মাস ধরে চলা যুদ্ধ নতুন এক পর্যায়ে প্রবেশ করেছে।

ফেব্রুয়ারিতে প্রতিবেশী দেশে সেনা পাঠানোর সময় রাশিয়া যে কয়েকটি লক্ষ্য ঠিক করেছিল, তার অন্যতম ছিল শিল্পসমৃদ্ধ দনবাস থেকে ইউক্রেইনীয় বাহিনীকে হটিয়ে দেওয়া।

লুহানস্ক ও তার পার্শ্ববর্তী দোনেৎস্ক মিলেই দনবাস; রোববার রাশিয়া লিসিচ্যাংস্ক শহর পুরোপুরি দখলে নেওয়ার পরপরই তাদের দনবাস দখলের লক্ষ্য অর্ধেক পূরণ হয়ে যায় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ইউক্রেইনের পূর্বের লুহানস্ক প্রদেশ, বিশেষ করে জমজ শহর সিয়েভিয়ারোদোনেৎস্ক ও লিসিচ্যাংস্কের লড়াইয়ে উভয়পক্ষই বিপুল পরিমাণ সৈন্য হারিয়েছে। রাশিয়ার টানা গোলাবর্ষণের কারণে দুই শহর থেকেই শেষ পর্যন্ত কিইভবাহিনীকে পিছু হটতে হয়।

মঙ্গলবার থেকে তারা দোনেৎস্ক রক্ষার প্রতিরক্ষা লাইনে শক্তিবৃদ্ধিতে মনোযোগী হয়েছে; এই প্রদেশটির বেশিরভাগ বড় শহর এখনও কিইভের নিয়ন্ত্রণে আছে। অন্যদিকে পুতিন লিসিচ্যাংস্ক অভিযানে থাকা সেনাদের ‘বিশ্রামে যেতে ও সামরিক শক্তি পুনরুদ্ধারের’ নির্দেশ দিলেও অন্য এলাকায় লড়াই চালিয়ে যাওয়া সেনাদের অভিযান চালিয়ে যেতে বলেছেন।

সোমবার রাতভর স্লোভিয়ানস্ক ও ক্রামাতোরস্কে রুশ বাহিনী গোলাবর্ষণ করেছে বলে জানিয়েছেন দোনেৎস্কের গভর্নর পাভলো কিরিলেঙ্কো।

তবে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা ওলেকসি আরেস্তোভিচ অনলাইনে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, লুহানস্কের পর আর জয়ের দেখা পাবে না মস্কো।

“ইউক্রেইন ভূখণ্ডে এটাই রাশিয়ার শেষ জয়। লুহানস্কের শহরগুলো ছিল মাঝারি আকারের। তা জিততেই ৪ এপ্রিল থেকে ৪ জুলাই, ৯০ দিন লেগেছে; কত কত ক্ষতি হয়েছে,” বলেছেন তিনি।

দোনেৎস্ক রক্ষার পাশাপাশি ইউক্রেইন দক্ষিণে পাল্টা আক্রমণের যাবে বলে আশা আরেস্তোভিচের।

“রাশিয়ার সেনাদের ৬০ শতাংশই এখন পূর্বাঞ্চলে; ওই সেনাদের দক্ষিণে পাঠানোটা কঠিন হবে। রাশিয়া থেকে পাঠানোর মতো সেনাও নেই। সিয়েভিয়ারোদোনেৎস্ক ও লিসিচ্যাংস্কের জন্য তাদেরকে বেশ চড়া দাম দিতে হয়েছে,” বলেছেন তিনি।

অনেক সমর বিশেষজ্ঞের মতে, কষ্টকর লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে লুহানস্ক পেলেও তাতে রুশ বাহিনীর কৌশলগত লাভ খুব একটা হবে না। লুহানস্ক মস্কোর কর্তৃত্বে যাওয়ার মাধ্যমে মূলত দনবাসে এখন দুই পক্ষের মধ্যেই এক ধরনের ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে।

পূর্বাঞ্চলের পাশাপাশি ইউক্রেইন খুব শিগগিরই দক্ষিণেও রুশ বাহিনীর হাতে থাকা ভূমি পুনরুদ্ধারে পাল্টা আক্রমণ শুরু করবে বলেও অনুমান তাদের।

এদিকে মঙ্গলবার রাশিয়ার একাধিক রকেট দক্ষিণাঞ্চলীয় মাইকোলাইভে আঘাত হেনেছে বলে জানিয়েছেন শহরটির মেয়র ওলেকসান্দার সেনকেভিচ; শহরটির অবস্থান খেরসন ও ওদেসার মাঝামাঝি।

রাশিয়া সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ওদেসায় তাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিমাণ বাড়িয়েছে।