বিবিসি জানিয়েছে, মঙ্গলবার ওই হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ ধাওয়া করে ২২ বছর বয়সী রবার্ট-ই ক্রিমো থ্রি নামের ওই শেতাঙ্গ যুবককে আটক করে।
ইলিনয়ের হাইল্যান্ড পার্কে স্থানীয় সময় সকাল ১০ টার দিকে কুচকাওয়াজ শুরুর মিনিট দশেক পর কয়েকটি গুলির শব্দে অনুষ্ঠান অকস্মাৎ বন্ধ হয়ে যায়।
বিবিসি লিখেছে, স্থানীয় একটি দোকানের ছাদ থেকে ভারী রাইফেলে ব্যবহার করে প্যারেডের ওপর গুলি চালায় হামলাকারী। এ ঘটনায় আরও ২৪ জন আহত হয়েছেন, তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বন্দুক হামলার সর্বশেষ ঘটনা এটি। চলতি বছর সেখানে প্রতি সপ্তাহেই অন্তত একটি গুলির ঘটনা ঘটেছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, শিকাগোর ঘটনায় তিনি স্তম্ভিত।
পুলিশ বলছে, ক্রিমো নামের যে যুবককে তারা গ্রেপ্তার করেছে, গুলির জন্য সেই দায়ী বলে তাদের ধারণা। তবে তার বিরুদ্ধে এখনও মামলা হয়নি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ক্রিমোর অ্যাকাউন্ট স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। ছদ্মনামের একটি আইডি থেকে র্যাপ ভিডিও পোস্ট করতেন তিনি।
স্বাধীনতা দিবসের এই আয়োজনে ব্যান্ড বাদন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বিভিন্ন কর্মসূচি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উৎসব আর আনন্দ মুহূর্তে পাল্টে যায় আতঙ্কের আবহে।
আনন্দ পি নামে এক ব্যক্তি বলেন, '“আমরা পরিবার নিয়ে গিয়েছিলাম, ভেবেছিলাম সুন্দর একটা সময় কাটবে। কিন্তু হঠাৎ গুলাগুলি শুরু হল। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম হয়ত গাড়ির ব্যাকফায়ারের শব্দ। কিন্তু মানুষ দৌড়াতে শুরু করল। আমরাও তখন দৌড়াতে শুরু করলাম “
নোয়েল হারা নামে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ছেলেকে কুচকাওয়াজে পৌঁছে দিয়ে তিনি স্টারবাকসে বসেছিলেন নাস্তা করতে। তখনই গোলাগুলি শুরু হয়।
“জনা ত্রিশেক লোক হঠাৎ চিৎকার করতে করতে ভেতরে ঢুকল, সবাই ছিল আতঙ্কিত। তখন আমরা সবাই টয়লেটে গিয়ে আশ্রয় নিলাম। কিছুক্ষণ পর আমাদেরকে উদ্ধার করা হল। পুলিশ ভেবেছিল, বন্দুকধারী হয়ত পেছনের দরজা দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করবে।”
টেক্সাসের উভালদে আর নিউ ইয়র্কের বাফেলোর হত্যাকাণ্ডের ঠিক এক মাসের মাথায় হাইল্যান্ডের পার্কের এই হামলা হল।
হাইল্যান্ড পার্কের এই মর্মান্তিক গুলির ঘটনাকে ‘বিপর্যয়কর’ আখ্যা দিয়েছেন শিকাগোর মেয়র লোরি লাইটফুট।ইলিনয়ের গভর্নর জে রবার্ট প্রিৎজকার আক্ষেপ করে বলেছেন, গুলি করে মানুষ হত্যা যেন 'আমেরিকার ঐতিহ্যে' পরিণত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “কিছু মানুষ আছেন, যারা এই পরিস্থিতিকেও অস্ত্রের অবাধ ব্যবহার বন্ধের সঠিক সময় বলে মানতে চান না। আমি তাদের বলতে চাই, সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য এর থেকে উপযুক্ত সময় আর হয় না।”
বন্দুকবাজির এই ‘মহামারী’ বন্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হোয়াইট হাউজের বাইরে এক বক্তৃতায় তিনি বলেছেন, “আমি হাল ছাড়ছি না।''
অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে গত সপ্তাহে গুরুত্বপূর্ণ একটি আইনে স্বাক্ষর করেন বাইডেন। তরুণদের কাছে অস্ত্র বিক্রির আগে তাদের পারিবারিক ইতিহাস ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে বলা হয়েছে ওই আইনে।