জাতিসংঘ মিশন থেকে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি কর্তৃপক্ষকে দেশজুড়ে গণকবর অনুসন্ধান কাজ জারি রাখার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
মিশন থেকে যে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে, সেটি এ সপ্তাহে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের কাছে পেশ করা হবে।
কীভাবে সাত ভাই পরিচালিত একটি মিলিশিয়া দল ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে লিবিয়ায় শত শত মানুষকে হত্যা এবং কারাবন্দি করেছে তার বিস্তারিত বিবরণ এ প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
ত্রিপোলি থেকে ৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বের শহর তারহুনায় লোকজনকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে হত্যা ও নির্যাতনের চিত্র প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
একটি স্বাধীন সত্যানুসন্ধান মিশন ওই মিলিশিয়া দলের নিপীড়নের খবর প্রথম জনসম্মুখে নিয়ে আসে।
যে ঘটনা ২০১১ সালে লিবিয়ার সাবেক শাসক মোহাম্মদ গাদ্দাফির উৎখাতের পর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
৫১ পাতার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নারী, শিশু এমনকী প্রতিবন্দ্বীরাও নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে এবং দুই জায়গায় সরজমিনে পরিদর্শন করে মিশন থেকে ‘কানিয়াত’ মিলিশিয়ার বিরুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের ‘যুক্তিসঙ্গত কারণ’ খুঁজে পেয়েছে। প্রতিবেদনে সরাসরি অংশগ্রহণকারী চারজন কমান্ডারকেও চিহ্নিত করা হয়েছে।
লিবিয়া কর্তৃপক্ষ তারহুনা থেকে আগেই গণকবর এবং বিভিন্ন ছোট ছোট কবর থেকে ২৪৭টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। অনেক মৃতদেহ হাত বাধা এবং চোখ বাধা অবস্থায় পাওয়া গেছে।
জাতিসংঘ মিশন থেকে ভূউপগ্রহের ছবি পরীক্ষা করে যেখানে মাটির অসামঞ্জস্যতা পাওয়া গেছে এবং অন্যান্য আরো কিছু প্রমাণ পরীক্ষা করে নতুন তিনটি ‘সম্ভাব্য’ গণকবর শনাক্ত করা হয়েছে।
কিন্তু সেখানে আরো অনেক গণকবর থাকতে পারে বলে ধারণা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ মিশন। ইতোমধ্যেই ওই এলাকায় ‘দ্য ল্যান্ডফিল’ নামের একটি কবর আছে। এলাকাটির খুব সামান্য অংশই খুঁড়ে দেখা হয়েছে।
“ব্যক্তিগত পর্যায়ে যেসব খবর পাওয়া গেছে, তাতে সেখানে ১০০ টি পর্যন্ত গণকবর এখন অনাবিষ্কৃত অবস্থায় থাকতে পারে,”বলা হয়েছে জাতিসংঘ মিশনের প্রতিবেদনে।
জাতিসংঘ মিশনের এই প্রতিবেদন লিবিয়া কর্তৃপক্ষের উপর কী প্রভাব ফেলবে তা এখনও অজানা। জেনেভায় লিবিয়ার কূটনৈতিক মিশন থেকে এ বিষয়ে মন্তব্য করার অনুরোধে সাড়া দেয়নি।