লুহানস্কের পতনের পর এখন কোন পথে এগুবে রাশিয়া?

লিসিচ্যাংস্ক শহর দখলের মধ্য দিয়ে ইউক্রেইনের লুহানস্ক অঞ্চলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাশিয়ার হাতে চলে আসার পর এখন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে?

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 July 2022, 05:42 PM
Updated : 4 July 2022, 05:59 PM

বিবিসি বলছে, রাশিয়া যে এখন দনবাস অঞ্চলের বাদবাকি অংশ দখলে নেওয়ার চেষ্টা করার জন্য অগ্রসর হবে সেটি একরকম নিশ্চিত বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।

বিশেষ করে স্লাভিয়ানস্ক এবং ক্রামাতোরস্ক নগরী দখলের চেষ্টা চালাবে রাশিয়া। সম্প্রতি কয়েক দিনে এ দুটো নগরীই গোলা হামলার শিকার হয়েছে।

দনবাস অঞ্চলকে ‘মুক্ত’ করার লক্ষ্যের কথা রাশিয়া আগেও বলে এসেছে। এখন লুহানস্ক দখলের পর তারা এ লক্ষ্য পূরণে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল।

দনবাসের উত্তরাঞ্চলীয় ক্রামাতোরস্ক নগরী বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ২০১৪ সালে এই নগরীতেই প্রথম আন্দোলন হয়েছিল।

এই নগরী দখলের চেষ্টা করা ছাড়াও ইউক্রেইন যুদ্ধে ব্যাপক পরিসরে আর কী কী পরিকল্পনা রাশিয়ার আছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।

রুশ বাহিনী দনবাসের দখল নিতে পারবে কিনা বা কখন পারবে সেটি বেশিরভাগই নির্ভর করবে এই বাহিনীর অবস্থা কেমন তার ওপর।

রুশ প্রেসিডেন্ট ‍পুতিন আকার-ইঙ্গিতে একরকম স্বীকারই করেছেন যে, “লুহানস্কে লড়াই করে যে রুশ সেনারা জয় ছিনিয়ে এনেছে তাদেরকে কিছু সময়ের জন্য বিশ্রাম নিতে হবে। যাতে তারা আবার নতুন উদ্যমে কাজ অভিযান শুরু করতে পারে।”

এখন বিশ্লেষকরা যেমনটি মনে করছেন এবং ‍পুতিন যেমন ইঙ্গিত দিয়েছেন, রুশ সেনারা সেরকম পরিশ্রান্ত হয়ে থাকলে, রাশিয়া তাদের ‘বিশেষ সামরিক অভিযানের’ সমাপ্তি ঘোষণা করতে পারে-এমনটিও হওয়া সম্ভব।

সেক্ষেত্রে রাশিয়া হয়ত এমনটিই আশা করে থাকবে যে, একতরফা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হলে ইউক্রেইনের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্র্থনের বাড়-বাড়ন্ত কিছুটা কমবে। বিশেষ করে ফ্রান্স, জার্মানির মতো কিছু দেশ যারা শান্তি চায়, তাদের দিক থেকে ইউক্রেইনে অস্ত্র সরবরাহ কমতে পারে।

ইউক্রেইন যে লড়াইয়ে ক্ষ্যান্ত দেবে না সেটি সন্দেহাতীত। কিন্তু তাদের হাতে অস্ত্র সরবরাহ আসতে না থাকলে সক্রিয় সশস্ত্র লড়াই থেমে গেলেও কোনও শান্তি চুক্তি কিংবা সমাধানসূত্রের দেখা মিলবে না।

যেমনটি হয়েছে সেই ২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যকার সময়টিতে। আর এমন হলে তা রাশিয়ার জন্য অনুকূলই হবে। কারণ, এতে করে প্রতিবেশী দেশটিতে বিশৃঙ্খলা এবং অস্থিরতা জিইয়ে রাখতে পারবে রাশিয়া।

তবে এ মুহূর্তে, এসব কোনওকিছুই নিশ্চিত নয়। এখনও রাশিয়া এবং ইউক্রেইন দুই পক্ষই নিজেদের শক্তিশালী অবস্থান ধরে রাখার দাবি করছে।

দনবাস অঞ্চলে ইউক্রেইন এখন পশ্চাদপসরণশীল হলেও কয়েকদিন আগে তারা আরেক জায়গায় সফলতা পেয়েছে, বিশেষ করে স্নেক আইল্যান্ড পুনরায় দখল করেছে তারা। সেখানে আবার ওড়ানো হয়েছে ইউক্রেইনের পতাকা; সেটিও লক্ষ্য করার মতো বিষয়।

এখন কেবল একটি কথাই নিশ্চিত করে বলা যায়, তা হচ্ছে- ইউক্রেইন যুদ্ধ সহসাই শেষ হবে না। এর পরিণতিতে সামনের দিনগুলোতে দুর্ভোগে পড়বে ইউক্রেইনের দোনেৎস্ক অঞ্চলের মানুষেরা।