ছবিটির পোস্টার ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা লীনা মণিমেকালাই গত ২ জুলাই প্রকাশ করেছিলেন। তাতেই দেখা গেছে, দেবীর বেশভূষা পরা এক নারী সিগারেটে টান দিচ্ছেন।
শুধু তাই নয়, ওই নারীর এক হাতে ত্রিশূল এবং অন্য হাতে এলজিবিটি সম্প্রদায়ের পতাকাও দেখা গেছে। তারপর থেকেই ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে হিন্দুরা।
মা কালী হিন্দু দেবদেবীদের মধ্যে সর্বশক্তিমান দেবী দুর্গার এক অবতার। কালীকে যেমন নারী শক্তির এক পবিত্র রূপ বলে মনে করা হয়, তেমনি তার সংহারী রূপের লোককথা হিন্দুশাস্ত্রে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে এই দেবীর জয়ের কথাই বলে।
হিন্দু সম্প্রদায়ের অভিযোগ, নির্মাতারা পোস্টারে দেবী ‘কালী’কে অপমান করেছেন। লীনা মণিমেকালাইয়ের বিরুদ্ধে হিন্দুদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগ উঠেছে।
ছবির এই পোস্টার হিন্দু ধর্মের প্রতি অশ্রদ্ধা বলেও মনে করেছেন অনেকেই। তাই পরিচালককে ছেড়ে দেওয়ার পক্ষপাতী নন কেউ। পোস্টারে দেবীর এমন রূপ দেখে সবাই পরিচালককে গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছে।
বিবিসি জানায়, লীনা মণিমেকালাইকে গ্রেফতারের দাবি ওঠায় সোমবার স্যোশাল মিডিয়ায় তার নাম নতুন ট্রেন্ড হয়েছে। হিন্দুত্ববাদীরা তার ওপর ক্ষোভ উগরে দিয়েছে। ‘অ্যারেস্ট লীনা মণিমেকালাই’ নামে একটি হ্যাসট্যাগও ট্রেন্ড হয়েছে।
তথ্যচিত্র ‘কালী’র নির্মাতা তামিল নাড়ুর মণিমেকালাই একাধারে ছবি পরিচালনা করাসহ কবিতা লেখিকা এবং অভিনেত্রী হিসাবেও সুনাম কুড়িয়েছেন। বর্তমানে কানাডায় পড়াশুনা করছেন তিনি।
বিবিসি-কে মণিমেকালাই বলেছেন, ছবিতে তিনি যে দেবী কালী কে দেখিয়েছেন – সেই দেবী “মানবতার অবতার, তিনি সমাজের নানা সম্প্রদায়কে সাদরে গ্রহণ করে নিয়েছেন।” নিজের স্বাধীন দৃষ্টিকোণ থেকেই তিনি কালী কে তুলে ধরেছেন বলে জানান মণিমেকালাই।
ভারতে সিনেমার পর্দায় কোনও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বকে দেখানো খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। ২০১৫ সালে ভারতের সেন্সর বোর্ড ‘অ্যাঙরি ইন্ডিয়ান গডেস’ নামের বলিউড ছবিতে অনেক দৃশ্য ছেঁটে ফেলতে বলেছিল।
তাছাড়া, ধর্মীয় থিম নিয়ে ছবি করার জন্য ভারতে অনেক চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং অভিনেতা-অভিনেত্রী বিক্ষোভের মুখেও পড়েন।
এবারের কালী তথ্যচিত্রটির পোস্টার এমন একটি সময়ে প্রকাশ্যে এসেছে, যখন কিছুদিন আগেই নবী মোহাম্মদ (সাঃ)-কে নিয়ে নুপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্য দেশব্যাপী সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণ হয়েছে।