প্রদেশটির স্বায়ত্তশাসন হ্রাস করার পরিকল্পনা নিয়ে গত সপ্তাহে অস্থিরতা শুরু হয়েছিল বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সোমবার এক ব্রিফিংয়ে দেশটির ন্যাশনাল গার্ডের প্রেস দপ্তর জানিয়েছে, গত শুক্রবার বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার সময় নিরাপত্তা বাহিনীগুলো ৫১৬ জনকে আটক করেছিল, এখন তাদের অনেককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
শনিবার প্রেসিডেন্ট শাভকাত মিরজায়োইয়েভ কারাকালপাকস্তানের স্বায়ত্তশাসন ও এর বিচ্ছিন্ন হওয়ার অধিকার সংক্রান্ত সংবিধানের অনুচ্ছেদ সংশোধন করার পরিকল্পনা বাদ দেন। উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশটিতে মাসব্যাপী জরুরি অবস্থাও ঘোষণা করেন তিনি।
দাপ্তরিক প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার বিক্ষোভকারীরা কারাকালপাকস্তানের প্রাদেশিক রাজধানী নুকুসে মিছিল করে এবং স্থানীয় সরকারি ভবনগুলো দখল করার চেষ্টা করে, এতে মধ্য এশিয়ার দেশটিতে প্রায় দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতার সূচনা হয়।
রিপাবলিক অব কারাকালপাকস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রধান সুলতানবেক জিয়ায়েভ নিউজ ওয়েবসাইট দারিও ডট ইউজেডকে বলেছেন, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে আহতদের দিয়ে নুকুসের হাসপাতালগুলো ভরে গেছে।
আরেকটি নিউজ ওয়েবসাইট কুন ডট ইউজেডে রোববার প্রকাশিত নুকুসের একাধিক ছবিতে সড়কে ব্যারিকেড, জ্বলন্ত ট্রাক এবং সাঁজোয় যানসহ ব্যাপক সেনা উপস্থিতি দেখা গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা ভিডিওতে আহত অন্তত দুই ব্যক্তিকে কয়েকজনে মিলে ধরে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। এ দুইজনের মধ্যে একজনের তলপেট থেকে রক্ত ঝরছিল, আরেকজন চিৎকার করছিলেন ।
এ ভিডিওর সত্যতা তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।
শাসকদের কঠোর নিয়ন্ত্রণে থাকা সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র উজবেকিস্তানের সরকার যে কোনো ধরনের ভিন্নমত শক্তহাতে দমন করে।
কারাকালপাকস্তানের অবস্থান আরল সাগরের (হ্রদ) তীরে। এই হ্রদটি কয়েক দশক ধরে পরিবেশগত বিপর্যয়ে ভুগছে। কারাকালপাকস্তানে সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠী কারাকালপাকদের বসবাস। তাদের ভাষা কাজাখ ও উজবেকদের কাছাকাছি।
মিরজায়োইয়েভ সোমবার কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসিম জোমার্ত তোকায়েভের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রবাসী কারকালপাকদের সবচেয়ে বড় অংশ কাজাখস্তানেই বসবাস করে। তোকায়েভের দপ্তর জানিয়েছে, কারাকালপাকস্তানে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে তাশখন্দের (উজবেকিস্তানের রাজধানী) নেওয়া সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।
এ নিয়ে চলতি বছর মধ্য এশিয়ায় অস্থিরতার দ্বিতীয় ঘটনা ঘটল। এর আগে জানুয়ারিতে কাজাখস্তান ব্যাপক বিক্ষোভ গুড়িয়ে দিয়েছিল; শৃঙ্খলা ফেরাতে কর্তৃপক্ষকে সহায়তায় রাশিয়া ও অন্যান্য সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র তখন দেশটিতে সেনাও পাঠিয়েছিল।