সীমান্তের কাছে ‘বহিরাগত বস্তু’র সংস্পর্শ থেকে কোভিডের প্রাদুর্ভাব: উত্তর কোরিয়া

দক্ষিণ কোরিয়া সংলগ্ন সীমান্তের কাছে নাগরিকরা ‘বহিরাগত বস্তু’ স্পর্শ করার পর উত্তর কোরিয়ায় কোভিডের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে। রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এই দাবি করেছে।

>>রয়টার্স
Published : 1 July 2022, 11:40 AM
Updated : 1 July 2022, 11:40 AM

দক্ষিণের সীমান্তে উড়ে আসা কোনও বস্তুর আশেপাশে না যাওয়ার জন্য জনগণকে সতর্ক থাকার পরামর্শও দিয়েছে পিয়ংইয়ং।

দেশটির রাষ্ট্রীয় কেসিএনএ সংবাদ মাধ্যম বলেছে, “কোভিডের প্রকোপের কারণ জানতে চালানো একটি তদন্তের ফল ঘোষণা করে উত্তর কোরিয়া বাতাসে কিংবা অন্য কোনও আবহাওয়াজনিত পরিস্থিতিতে সীমান্ত এলাকায় কোনও বহিরাগত বস্তু এবং বেলুন এলে সেটি সম্পর্কে জনগণকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে।”

কেসিএনএ সরাসরি দক্ষিণ কোরিয়ার নাম উল্লেখ করেনি। তবে উত্তর কোরিয়ার পক্ষত্যাগীরা এবং অধিকারকর্মীরা দশকের পর দশক ধরে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে বেলুন করে লিফলেট কিংবা মানবিক ত্রাণ উত্তর কোরিয়ায় পাঠিয়ে আসছে।

তবে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউল বলছে, এভাবে কোভিড-১৯ সীমান্ত অতিক্রম করতে পারার ‘কোনও সম্ভাবনা নেই।’ কিন্তু উত্তর কোরিার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলছে, সরকারি তদন্তে দেখা গেছে যে, কোভিড সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার শুরুর দিকে এ রোগে আক্রান্ত দুই ব্যক্তি দক্ষিণ কোরিয়া সীমান্তের কাছে অজ্ঞাত বস্তুর সংস্পর্শে এসেই সংক্রমিত হয়েছিলেন।

কেসিএনএ’র প্রতিবেদনে বলা হয়, এপ্রিলের শুরুর দিকে ১৮ বছর বয়সী এক সেনা এবং পাঁচ বছর বয়সী এক শিশু ইফো-রির একটি পাহাড়ে অজ্ঞাত বস্তু খুঁজে পাওয়ার পরই তাদের শরীরে কোভিডের উপসর্গ দেখা দেয়। পরীক্ষা করে জানা যায়, তারা কোভিড পজিটিভ। তখন থেকেই ভাইরাসটি উত্তর কোরিয়াজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফলে কেউ অদ্ভুত কোনও জিনিস দেখলে তৎক্ষণাৎ সে ব্যাপারে জানাতে বলা হয়েছে, যাতে মহামারী মোকাবেলায় নিয়োজিত জরুরি সেবা দল দ্রুত সেটি সরিয়ে ফেলতে পারে।

দুই কোরিয়ার সীমান্ত বিশ্বের সবচেয়ে জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থাধীনে থাকা অন্যতম স্থান। তবে দলত্যাগী এবং দক্ষিণ কোরিয়ার অধিকারকর্মীরা বছরের পর বছর সীমান্ত দিয়ে বেলুন উড়িয়ে উত্তর কোরিয়া বিরোধী বার্তা পাঠাচ্ছে।

এপ্রিলের শেষের দিকে উত্তর কোরিয়ায় প্রায় ৪৭ লাখ মানুষের ‘জ্বর’ হলে সেটিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বলে বিশ্বাস করা হয়েছিল, যা পরীক্ষা না করার কারণে বোঝা যায়নি।

পরে মে মাসে দেশটির প্রেসিডেন্ট কিম-জং-উন কোভিডের প্রাদুর্ভাবকে ‘উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশের ওপর এসে পড়া সবচেয়ে বড় দুর্ভোগ’ বলে বর্ণনা করেন।

মহামারী ঠেকাতে শুরু থেকেই কঠোর বিধিনিষেধ কার্যকর করে আসছিল উত্তর কোরিয়া। এ বছর পর্যন্ত উত্তর কোরিয়া কোভিড-১৯ সংক্রমণের পুরোপুরি বাইরে ছিল বলেই দাবি কর্মকর্তাদের। তবে বিশেজ্ঞরা বলছেন, এর আগেও কোভিড সংক্রমণ ছড়িয়ে থাকতে পারে।

ওদিকে, আড়াই কোটি মানুষের দেশটি টিকাদান কর্মসূচির অভাব এবং দুর্বল স্বাস্থ্যসেবার জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি চীনে তৈরি একটি টিকার প্রস্তাবও গ্রহণ করেছে উত্তর কোরিয়া।

এখন পর্যন্ত কতজনকে টিকা দেওয়া হয়েছে তার কোনো তথ্য নেই। তবে গত কয়েক সপ্তাহে সংক্রমণ উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে বলেও পিয়ংইয়ংয়ের দাবি।