বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজভবনে তারা শপথ নেন। মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েই শিন্ধে বলেন, “আমাদের সরকার সাধারণ মানুষ এবং রাষ্ট্রের উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করবে।”
বিজেপি নেতা ফড়নবীশ এর আগে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছিলেন, এদিন কেবল শিন্ধেই শপথ নেবেন, অন্য কোনও মন্ত্রী নয়।
তাছাড়া, তিনি নিজেও সরকারে থাকবেন না, কেবল বাইরে থেকে সরকার সুষ্ঠুভাবে চলছে কিনা তা নিশ্চিত করবেন বলেও জানিয়েছিলেন ফড়নবীশ।
কিন্তু পরে বিজেপি ফড়নবীশকে রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদে দেখতে চাওয়ায় পাল্টে যায় দৃশ্যপট।
এনডিটিভি জানায়, বিজেপি’র প্রধান জে পি নাড্ডা বলেছিলেন, ফড়নবীশকে রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী হতেই হবে…তিনি ব্যক্তিগতভাবে ফড়নবীশের কাছে সে অনুরোধ জানাবেন।
এর কয়েক ঘণ্টা পরই শপথ অনুষ্ঠানে শিন্ধের সঙ্গে উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিতে দেখা যায় ফড়নবীশকে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শিন্ধে এবং ফড়নবীশ দুইজনকেই অভিনন্দন জানিয়েছেন।
শিন্ধেকে মাঠ পর্যায়ের একজন নেতা বলে বর্ণনা করে মোদী বলেন, রাজনীতি, বিচারবিভাগ এবং প্রশাসনিক নানা ক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এই নেতা মহারাষ্ট্রকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে এ ব্যাপারে তার আস্থা আছে। অন্যদিকে, ফড়নবীশের অভিজ্ঞতাও শিন্ধে সরকারের জন্য সম্পদ হবে বলেও মোদী উল্লেখ করেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে দেবেন্দ্র ফড়নবীশ এবং একনাথ শিন্ধে একসঙ্গে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারির সাথে সাক্ষাৎ করতে যান। সরকার গঠনের দাবি জানান তারা।
রাজ্যপাল তাদের অনুমতি দেন। এরপরই সাংবাদিক সম্মেলন ফড়নবীশ আকস্মিকভাবে ঘোষণা দেন যে, একনাথ শিন্ধে হচ্ছেন রাজ্যের নতুন মুখ্যমন্ত্রী। ফড়নবীশের এ ঘোষণার পরই তাকে কৃতজ্ঞতা জানান শিন্ধে।
তিনি বলেন, "বিজেপির ১২০ জন বিধায়ক আছেন। তারপরও মুখ্যমন্ত্রীর পদ নেননি ফড়নবীশ। তিনি অনেক বড় মনের পরিচয় দিয়েছেন। তার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।”
“প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের কাছেও আমি কৃতজ্ঞ। এটি তাদের উদারতা। তাদের অনেক বড় সমর্থন আছে। তারপরও তারা আমাকে মুখ্যমন্ত্রী করেছেন। কে তা করে?"
এরপরই ঘটনা নতুন আরেক মোড় নেয়। বিজেপি প্রেসিডেন্ট জেপি নাড্ডা জানান, ফড়নবীশকে নতুন শিন্ধে সরকারে উপ-মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এর কয়েক মিনিট পরই ইউনিয়ন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও এক টুইটে বলেন, ফড়নবীশ একনাথ শিন্ধে সরকারে যোগ দিচ্ছেন।
শিবসেনার বিধায়কদের বড় একটি অংশ, মোট ৩৯ জন বিধায়ক দলের জ্যেষ্ঠ নেতা একনাথ শিন্ধের নেতৃত্বে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের বিরুদ্ধে চলে যাওয়ায় ঠাকরে সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছিল।
পরে ঠাকরের সরকারকে শক্তি পরীক্ষার আদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু সেই পরীক্ষার আগেই উদ্ধব ঠাকরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীত্ব এবং বিধানসভার সদস্যপদ থেকেও ইস্তফা দেন।