চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগের পাল্টা প্রকল্প আনছে জি-৭

উন্নয়নশীল দেশগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে ৬০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের তহবিল গঠনের বিস্তারিত পরিকল্পনা নিয়েছেন জি-৭ নেতারা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 June 2022, 05:58 PM
Updated : 27 June 2022, 05:58 PM

বিবিসি জানায়, চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ (বিআরআই) এর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে বিশ্বের ধনী দেশগুলোর সংগঠন জি-৭ এই পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্বের ওপর চীনের প্রভাব দিন দিন বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের পর চীন এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। চীনকে টেক্কা দিতে এখন পশ্চিমাবিশ্বকে ভাবতে হচ্ছে।

উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য চীনের ওই উদ্যোগের পাল্টা উদ্যোগ কী হতে পারে তা নিয়ে অবশ্য গত বছর যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলনেই আলোচনা হয়। এ বছর জি৭ সম্মেলন হচ্ছে জার্মানিতে।

গত বছর উত্থাপিত বিষয়টি রোববার নতুন করে নতুন নামে উপস্থাপন করা হয়। যার নাম দেওয়া হয়েছে, `দ্য পার্টনারশিপ ফর গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট' (পিজিআইআই)। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, প্রত্যেকে এই পরিকল্পনার সুফল পাবেন।

চীনের হাজার কোটি ডলারের উচ্চাভিলাষী প্রকল্প ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’। ২০১৩ সালে চীনের প্রধানমন্ত্রী শি জিনপিং এই প্রকল্প গ্রহণ করেন। এ প্রকল্পের অধীনে চীন অর্থনৈতিকভাবে উদীয়মান দেশগুলোকে বন্দর, সড়ক ও সেতুর মত অবকাঠামো নির্মাণে ঋণ দিয়ে থাকে।

কিন্তু এখন অভিযোগ উঠছে, চীন এই প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ঋণের ফাঁদে ফেলে তাদের মাথায় বিশাল অংকের ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন নিজেদের পিজিআইআই প্রকল্প নিয়ে বলেছেন, ‘‘আমি আপনাদের পরিষ্কার করে বলতে চাই, এটি সাহায্য বা দাতব্য কিছু নয়। এটি একটি বিনিয়োগ, যার সুফল সবাই পাবেন।”

এ প্রকল্প গণতান্ত্রিক বিশ্বের সঙ্গে অংশীদার দেশগুলোকে সুনির্দিষ্ট সুফল পাওয়ার সুযোগ করে দেবে বলেও মনে করে বাইডেন।

গৃহীত পরিকল্পনায় জি-৭ নেতাদের প্রতি মধ্যম ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে অবকাঠামোগত প্রকল্পে বিনিয়োগের জন্য তহবিল গঠনে ৫ বছরের মধ্যে ৬০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার সংগ্রহ করার আহ্বান জানানো হয়।

মঞ্জুরি, ফেডারেল তহবিল ও বেসরকারি বিনিয়োগের মাধ্যমে ২০ হাজার কোটি ডলার তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২৫ হাজার ৭০০ কোটি ডলার তোলার ঘোষণা দিয়েছে।

এই উদ্যোগ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মান বাড়ানো, লিঙ্গ সমতা অর্জন এবং ডিজিটাল অবকাঠামো তৈরি ত্বরান্বিত করবে।

পরিকল্পনায় উল্লেখযোগ্য কিছু উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে—অ্যাঙ্গোলায় সৌরবিদ্যুৎচালিত প্রকল্প গ্রহণ, সেনেগালে টিকা উৎপাদন কারখানা নির্মাণ, সিঙ্গাপুর থেকে মিশর ও হর্ন অব আফ্রিকা হয়ে ফ্রান্স পর্যন্ত ১ হাজার ৬০৯ কিলোমিটার সাবমেরিন টেলিযোগাযোগ ক্যাবল স্থাপন।