রোববার জাপান সরকারের পক্ষ থেকে এ অনুরোধ জানানো হয়। দেশটির অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, স্থানীয় সময় সোমবার বিকাল নাগাদ ‘বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেশি বেড়ে যাবে’ বলে তারা ধারণা করছেন।
এ কারণে তারা রাজধানী ও আশেপাশের এলাকার মানুষের অপ্রয়োজনে বাতি জ্বেলে না রেখে বরং সেগুলো বন্ধ রাখা উচিত বলেছেন। তবে বাতি নেভালেও হিটস্ট্রোক এড়াতে ওই সময়ে তারা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) ব্যবহার করতে পারবেন।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জাপানে তাপমাত্রা বাড়ছে। যে কারণে বিদ্যুতের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় যেকোনো সময় বিদ্যুত বিভ্রাট দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করে আসছিলেন দেশটির কর্মকর্তারা।
গত সপ্তাহের ছুটির দিনে টোকিওর মধ্যাঞ্চলে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠেছিল। আর রাজধানীর উত্তরপশ্চিমের নগরী ইসেসাকি এরইমধ্যে রেকর্ড ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা দেখেছে।
জাপানের ইতিহাসে জুন মাসে এটাই রেকর্ড সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। জাপানে জুন মাসকে গ্রীষ্মের শুরুর মাস ধরা হয়। সাধারণত জুন মাসে জাপানে তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকে।
বাসিন্দাদের বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার অনুরোধ জানানোর পাশাপাশি বিদ্যুৎ সরবরাহ কর্তৃপক্ষ তাপমাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকা বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সরবরাহ বাড়ানোর কাজ করে যাচ্ছে।
মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, তাপমাত্রা বাড়ার ফলে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা ‘অপ্রত্যাশিত’। যদি চাহিদা বৃদ্ধি এবং হঠাৎ সরবরাহের সমস্যা হয়, তাহলে রিজার্ভের মার্জিন প্রয়োজনীয় ন্যূনতম ৩ শতাংশের নিচে নেমে যাবে।
গত মাসে জাপানের উত্তরপূর্বাঞ্চলে ভূমিকম্পের পর থেকেই দেশটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহে টানাটানি দেখা দিয়েছে। ভূমিকম্পের পর ওই অঞ্চলের কয়েকটি পাওয়ার প্ল্যান্টের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
এছাড়া, কার্বন নিঃসরণ কমাতে কর্তৃপক্ষ জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর পুরাতন কয়েকটি প্ল্যান্টের কার্যক্রমও বন্ধ ঘোষণা করেছে। উৎপাদন কমে যাওয়া এবং চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণেই জাপানকে বিদ্যুৎ নিয়ে এ অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে।
এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি পড়তে হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে এ মাসের শুরুতেই জাপান সরকার বাসাবাড়ি এবং অফিসে যত কম সম্ভব বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে বলেছে। যাতে গ্রীষ্মের বাড়তি চাহিদা মোকাবেলা করা যায়।
তীব্র তাপদাহের কারণে জাপানে হিটস্ট্রোকের সংখ্যা বেড়ে গেছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এনএইচকে জানায়, রোববার বিকাল পর্যন্ত হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন সন্দেহে টোকিওতে ৪৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পার্শ্ববর্তী কাওয়াগোয়ে নগরীতে ৯৪ বছরের এক ব্যক্তি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলেও শোনা যাচ্ছে। শুধু জাপান নয় বরং অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস এবং সিডনি কর্তৃপক্ষও বাসিন্দাদের বিদ্যুতের ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার অনুরোধ করেছেন।