সোমবার আসিয়ানের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত ও ক্যাম্বোডিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রাক সোখন এ আনুরোধ জানান। বুধবার তার মিয়ানমার সফরের কথা রয়েছে।
গত বছর ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সুচি নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী।
এর প্রতিবাদে দেশজুড়ে কয়েক মাস ধরে টানা বিক্ষোভ চলে। বিক্ষোভ দমাতে সেনাবাহিনী বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে সরাসরি গুলিও ছোড়ে। কয়েক মাসের বিক্ষোভে কয়েকশ বিক্ষোভকারী নিহত হয়।
এ অবস্থায় দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশন্স (আসিয়ান) থেকে মিয়ানমারে শান্তি ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে জান্তা সরকারকে চাপ দেওয়া হয়।
আসিয়ানের ১০ সদস্যভুক্ত দেশের একটি মিয়ানমার। বর্তমান সামরিক সরকার দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সেই প্রতিশ্রুতির অংশ হিসাবেই আলোচনার জন্য বুধবার ক্যাম্বোডিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পার্ক সোখন মিয়ানমার সফরে যাবেন বলে জানিয়েছেন তার মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।
জান্তা সরকার ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারে এটি সখনের দ্বিতীয় সফর। গত মার্চে তিনি একবার মিয়ানমারে গিয়েছিলেন।
এবার সফরের আগে দিয়ে এক চিঠিতে সোখন জান্তা সরকারের কাছে সুচির প্রতি দয়া দেখানোর আহ্বান জানান বলে তার মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়।
চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘‘একটি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে আপনার দেশের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে এবং জাতীয় পুনর্মিলন ঘটাতে আন্তর্জাতিকভাবে এবং মিয়ানমারের অনেকের কাছে অং সান সু চি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী হিসেবে বিবেচিত হন।”
চিঠিতে তিনি আরও বলেন, একপক্ষকে বাইরে রেখে একটি সফল শান্তি প্রক্রিয়া কখনোই সম্ভব নয়।
সোখন বলেন, ‘‘কোনো সংঘাতের একটি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সমাধান পেতে হলে, তা সে যত জটিলই হোক না কেন, ওই সংঘাতে জড়িত সকল পক্ষকে অবশ্যই রাজনৈতিকভাবে স্থান ভাগাভাগি করে নিতে হবে।”
গত বছর সেনঅভ্যুত্থানের পর প্রথমেই সুচিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অন্তত ২০টি ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে। ছোট ছোট কয়েকটি মামলার তার সাজাও হয়েছে।
গত সপ্তাহের আগ পর্যন্তও তাকে অজ্ঞাত স্থানে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। গত সপ্তাহে ৭৭ বছরের সুচিকে রাজধানী নে পি তো’র একটি কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একটি নির্জন কারাকক্ষে তারা রাখা হয়েছে।
গত মার্চে সখন যখন মিয়ানমার সফরে গিয়েছিলেন তখন বিরোধীরা তার তীব্র সমালোচনা করে বলেছিলেন, তার সফল ব্যর্থ। কারণ, তিনি জান্তা সরকারের পক্ষে এবং বিরোধীদের সম্পূর্ণ উপক্ষা করে গেছেন।
সোখন তখন বলেছিলেন, তিনি বিরোধীদের এই ক্ষোভের কারণ বুঝতে পারছেন।