রোববার সিএনএ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেন জনসন।
জি-৭ সম্মেলনে অংশ নিতে বর্তমানে জনসন জার্মানিতে আছেন। বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির সাত দেশ যখন জার্মানির বাভারিয়াতে সম্মেলন করছে, তখন রাশিয়ার ছোড়া এক একটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বার বার কেঁপে উঠছে ইউক্রেইনের রাজধানী কিইভ।
ইউক্রেইন যু্দ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে তেলের দাম অনেক বেড়ে গেছে। শুধু তেল নয় বরং নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসের দাম ঊর্ধ্বমুখী। বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট।
তারপরও জনসন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোকে যুদ্ধ বন্ধ করতে মস্কোর উপর চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখার অনুরোধ করেছেন।
জনসন বলেন, ‘‘আমি কেবল যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের এটাই বলবো, এটি এমন কিছু যা আমেরিকা ঐতিহাসিকভাবেই করে এবং তাদের করতে হবে। এটা শান্তি, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের পক্ষে পদক্ষেপ নেওয়া।
“এবং যদি আমরা পুতিনকে এটি নিয়ে যেতে দেই; একটি মুক্ত, স্বাধীন, সার্বভৌম দেশের বিশাল অংশ জয় করতে দেই, যেটা তিনি করতে চাইছেন...তাহলে বিশ্বের জন্য এর পরিণতি একেবারেই বিপর্যয়কর হবে।”
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেইনে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। যুদ্ধ চারমাস শেষ হয়ে পঞ্চম মাসে পড়েছে।
শুরুতে আলোচনার মাধ্যমে এই যুদ্ধ বন্ধে কিছু উদ্যোগ দেখা গেলেও কোনও অগ্রগতি ছাড়াই তা বন্ধ হয়ে গেছে। রাশিয়া কোনো ভাবেই আগ্রাসন থামাতে রাজি না। পুতিনকে বাধ্যও করা যাচ্ছে না।
যুদ্ধ থামাতে বাধ্য করতে কীভাবে মস্কোর উপর আরও চাপ সৃষ্টি করা যায় তা নিয়ে এবারের জি-৭ সম্মেলনে আলোচনা হবে।
বিশ্বের শীর্ষ সাত শক্তিশালী অর্থনীতির দেশের সংগঠন জি-৭। মস্কোর উপর আরো চাপ সৃষ্টি করতে এরইমধ্যে জি-৭ ভুক্ত চার দেশ যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও জাপান রাশিয়া থেকে সোনা আমদানি বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। যা শিগগির বাস্তবায়ন করা হবে।
বাকি তিন দেশ জার্মানি, ফ্রান্স এবং ইতালিও একই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ইউক্রেইনের প্রতি সমর্থন জানাতে যুদ্ধ শুরুর পর দুইবার কিইভ ভ্রমণ করেছেন জনসন। সেখানে তিনি ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনেস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
জনসন বলেন, এই আগ্রাসনে রাশিয়া যদি জিতে যায় তবে তা বিপজ্জনক এক উদাহরণ সৃষ্টি করবে।
তিনি বলেন, ‘‘আমরা পরিণতি দেখতে পাচ্ছি, ওই শিক্ষা যা আগে থেকেই ঠিক করা থাকবে। আর সেটা হচ্ছে নিশ্চিতভাবেই বিপর্যয়কর, এবং সেটা শুধু দেশগুলোর গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতার জন্য নয় বরং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্যও।”
ইউক্রেইনকে রক্ষা করতে এবং রাশিয়াকে চাপে ফেলতে পশ্চিমাবিশ্ব যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে তার জন্য তাদেরও মূল্য দিতে হচ্ছে।
ইউরোপে জ্বালানির বড় উৎস ছিল রাশিয়া। দেশটির জ্বালানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে শুধু ইউরোপ নয় বরং পুরো বিশ্বজুড়েই জ্বালানির দাম বেড়ে গেছে।
সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে খাবার ও নিত্যপণ্যের দাম। ফলে নিজ দেশে সরকারকে সমালোচিত হতে হচ্ছে।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেইনের সক্ষমতা বাড়াতে দেশটিকে কোটি কোটি ডলারের সামরিক সহায়তাও দিতে হচ্ছে পশ্চিমাবিশ্বকে।