ভারতে ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প ঘিরে বিক্ষোভে উত্তাল বিহার

‘অগ্নিপথ প্রকল্পের’ অধীনে নতুন পদ্ধতিতে সেনাবাহিনীতে লোক নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে সহিংস বিক্ষোভে জ্বলছে ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় বিহার রাজ্য।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 June 2022, 09:24 PM
Updated : 16 June 2022, 09:24 PM

বিবিসি জানায়, বিহারের উত্তেজিত জনতা বৃহস্পতিবার ট্রেনের বগিতে আগুন দিয়েছে, অবরোধ করেছে রেললাইনসহ প্রধান প্রধান সব সড়ক। পাল্টা লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়েছে পুলিশও।

মঙ্গলবার ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পরিকল্পনা ‘অগ্নিপথ’-এর কথা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা করার পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছিলেন সেনাবাহিনীতে চাকরি করার স্বপ্ন দেখা বহু মানুষ।

সেই অসন্তোষ থেকেই তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয় বিহারে। বুধবারই ‘অগ্নিপথ’ নিয়ে বিহারের মুজফ্ফরপুর এবং বক্সার জেলায় বিক্ষোভ করে চাকরি প্রার্থীরা। ভারতীয় পত্রিকাগুলো বলছে, গোটা দেশেই একাধিক জায়গায় অশান্তি ছড়িয়েছে। একাধিক রাজ্যে পথে নেমে বিক্ষোভ করেছেন প্রতিবাদীরা।

‘অগ্নিপথ’ এর আওতায় সশস্ত্র বাহিনীতে অফিসার ব়্যাঙ্কের নিচে চার বছরের জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করে মন্ত্রণালয়। সেক্ষেত্রে আবেদনকারীদের বয়স ধরা হয় সাড়ে ১৭ বছর থেকে ২১ বছরের মধ্যে। তাদেরকে নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাবও করা হয় এই চারবছর বয়সসীমার মেয়াদে। বলা হয়, এরপর সেখান থেকে ২৫ শতাংশকে স্থায়ী ভাবে বাহিনীতে নেওয়া হবে। বাকিদের নেওয়া হবে না।

তারা অর্থকড়ি পেলেও, অবসরকালীন কোনও সুবিধা পাবে না। আর এ নিয়েই তীব্র আপত্তি তোলে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চাওয়া নাগরিকরা। বিক্ষোভকারীরা প্রশ্ন তোলে, ‘চার বছর পর আমরা কী করব?’

আগে ভারতের সশস্ত্র, নৌ এবং বিমান বাহিনী আলাদাভাবে সদস্য নিয়োগ করত। তারা সাধারণত নিম্নপদে ১৭ বছরের জন্য নিয়োগ পেতেন। কিন্তু এবার মাত্র চার বছর চাকরি করার পর সদস্যরা কোথায় যাবে সেটিই বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দেয়। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে এক যুবকের কণ্ঠে ফুটে উঠে উদ্বেগ- “চার বছর চাকরি করার পর আমরা তো গৃহহীন হয়ে পড়ব। এ জন্যই আমরা রাস্তায় নেমেছি।”

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিহারের বক্সারে বিক্ষোভ হয়েছে। বুধবার মুজাফফরপুরসহ আরও কয়েকটি স্থানে যুবকরা বিক্ষোভ দেখায়। কয়েকটি টায়ারে আগুন দেয় তারা। বিক্ষোভকারী এই যুবকরা বলছেন, তারা হতাশ। কারণ শারীরিকভাবে সুস্থ হওয়ার পরও সেনাবাহিনী তাদেরকে দুই বছর ধরে নিয়োগ দেয়নি। এরই মধ্যে সরকার আরেক নতুন পরিকল্পনা নিয়ে এসেছে।

এই প্রকল্পের আওতায় প্রতি বছর প্রায় ৪০-৪৫ হাজার যুবককে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করেছে ভারত সরকার। এতে সশস্ত্র বাহিনীতে তরুণদের আনাগোনা বাড়বে বলেই ভাষ্য সরকারের।

তবে প্রকল্পের বিরুদ্ধে যে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে তার মুখে সরকার বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনীতে নিয়োগের বয়সসীমা ২১ থেকে ২৩ বছর পর্যন্ত বাড়িয়েছে বলে প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে ভারতের ‘দ্য হিন্দু’ পত্রিকা।