‘গান লবির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে’ নাগরিকদের প্রতি আহ্বান বাইডেনের

টেক্সাসে স্কুলে গুলির ঘটনায় ১৯ শিশু ও ২ শিক্ষক নিহতের পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের দেশটির শক্তিশালী ‘গান লবির’ বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 May 2022, 11:02 AM
Updated : 25 May 2022, 11:20 AM

এশিয়া সফর শেষে দেশে ফিরে মঙ্গলবার তিনি বন্দুক নিয়ে সংবেদনশীল আইন পাসে কংগ্রেসের সদস্যদের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

“জাতি হিসেবে, নিজেদের কাছেই আমাদের প্রশ্ন করা উচিত, ঈশ্বরের নামে কখন আমরা গান লবির বিরুদ্ধে দাঁড়াবো। ঈশ্বরের নামে কখন আমরা সেটা করবো, যা করা দরকার বলে আমরা সবাই জানি।

“আমি ক্লান্ত ও বিরক্ত। আমাদের কিছু করতেই হবে। আমাকে বলবেন না যে, এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধে আমাদের কিছু করার নেই,” বলেন বাইডেন।

“আমি আশা করেছিলাম, আমি যখন প্রেসিডেন্ট হবো, আমাকে এরকমটা ফের আর করতে হবে না,” টেক্সাসের প্রাথমিক স্কুলের নিহত ‘সুন্দর, নিষ্পাপ’ শিক্ষার্থীদের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন তিনি।

জীবনে একাধিক পারিবারিক দুর্ঘটনার সাক্ষী এ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিহত শিশুদের মা-বাবাদের কথা উল্লেখ করে বলেন, “তারা আর কখনো তাদের সন্তানদের দেখবে না, কখনোই ওই সন্তানরা বিছানায় ঝাঁপিয়ে পড়বে না, জড়াজড়ি করে থাকবে না।”

আরেকটা ‘নির্বিচার গোলাগুলি’ দেখার পর যে ‘ক্ষমতাহীনতার অনুভূতি’ হয়, তার বিরুদ্ধে লড়তে মার্কিনিদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বাইডেন।

ছবি: রয়টার্স

মঙ্গলবার ১৮ বছর বয়সী এক বন্দুকধারী টেক্সাসের একটি প্রাথমিক স্কুলে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালানো শুরু করে, পরে পুলিশের গুলিতে বন্দুকধারী নিজেও নিহত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে ‘নির্বিচার গোলাগুলির’ ঘটনার পর প্রায়ই বিক্ষোভ ও ডেমোক্র্যাট রাজনীতিকদের প্রতি বন্দুক নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাতে দেখা যায়; কিন্তু রিপাবলিকানদের শক্ত বাধার মুখে অন্যান্য দেশের মতো কঠোর সুরক্ষার পদক্ষেপ নেওয়ার উদ্যোগ ভেস্তে যায়।  

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, মঙ্গলবার রাতে বাইডেন বন্দুক নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুললেও তিনি কী কী পদক্ষেপ নিতে চান সে বিষয়ে কিছু বলেননি; এ বিষয়ে কংগ্রেসে ভোট বা সুনির্দিষ্ট কোনো নীতি গ্রহণের আহ্বানও জানাননি তিনি।

কয়েকদিন আগে মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ‘বন্দুকধারীর হামলার’ ৬১টি ঘটনা দেখেছে, যা আগের বছরগুলোর তুলনায় অনেক বেশি, ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

টেক্সাসের এই গুলির ঘটনা বাইডেনের জন্যও ধাক্কা হিসেবে হাজির হয়েছে। ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতির হার ও ইউক্রেইনের যুদ্ধের কারণে তার প্রতি মার্কিনিদের আস্থা এমনিতেও অনেকখানি কমে গেছে বলে জনমত জরিপগুলো বলছে। 

বাইডেন প্রশাসনের ওপর বন্দুক সহিংসতা নির্মূলে তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি দ্রুত পূরণে চাপ বাড়িয়েছিল দশ দিন আগে নিউ ইয়র্কের বাফেলোতে একটি সুপারমার্কেটে ‘নির্বিচার গোলাগুলির’ ঘটনা, টেক্সাসের ঘটনায় সেই চাপ আরও বাড়ল।  

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ভোটের প্রচারে বাইডেন বন্দুক নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি ও বছরে বন্দুকের কারণে লাখো মৃত্যু কমিয়ে আনার অঙ্গীকার করেছিলেন। তবে তিনি ও তার অনুসারী ডেমোক্র্যাটরা এখন পর্যন্ত সেনেটে এ সংক্রান্ত বিল পাসে প্রয়োজনীয় সমর্থন জোগাড় করতে পারেননি।