শুক্রবার এক বিবৃতিতে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, সেখানে থাকা অবশিষ্ট ৫৩১ জন যোদ্ধা তাদের অস্ত্র নামিয়ে রেখে আত্মসমর্পণ করেছে।
“আজভস্তাইল লৌহ ও ইস্পাত কারখানা পুরোপুরি মুক্ত হয়েছে,” বিবৃতিতে বলেছে মন্ত্রণালয়টি; জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রায় তিন মাস আগে রাশিয়া ইউক্রেইনে আক্রমণ শুরু করার পর দেশটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহর ও বাণিজ্যকেন্দ্র মারিউপোল অবরোধ করে। রাশিয়ার হামলায় শহরটি প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। সময়ে সঙ্গে সঙ্গে শহরটির অধিকাংশ এলাকা রুশ বাহিনীর দখলে চলে গেলে প্রতিরোধকারী ইউক্রেইনীয় যোদ্ধারা প্রায় ১১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ইউরোপের অন্যতম বড় লৌহ ও ইস্পাত কারখানাটির ভূগর্ভস্থ সুরক্ষিত বাংকার ও টানেলের গোলাকধাঁধায় গিয়ে অবস্থান নেয়, তাদের সঙ্গে কয়েকশ বেসামরিকও ছিল।
রুশ বাহিনী কারখানাটি চারদিক থেকে অবরুদ্ধ করে সেখানে টানা গোলা ও বোমার্বষণ করতে শুরু করে। কারখানাটি থেকে যেন একটি ‘মাছিও বের হতে না পারে’ এমন নির্দেশনা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ইস্পাত কারখানাটিতে সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে অবস্থান নিয়ে থাকা এসব যোদ্ধা ও বেসামরিক খাদ্য, পানি ও ওষুধের সংকটে পড়ে। আহত অনেক যোদ্ধা বিনা চিকিৎসায় সেখানে আটকা পড়ে থাকেন।
এ পরিস্থিতিতে গত সোমবার ইউক্রেইন সরকার ওই যোদ্ধাদের তাদের অবস্থান ছেড়ে দেওয়ার আদেশ দেয়। এর আগে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেইনের মধ্যে হওয়া সমঝোতার ভিত্তিতে ইস্পাত কারখানাটিতে থাকা বেসামরিকদের কিইভের অধীনে থাকা একটি শহরে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর প্রথমে আহত যোদ্ধারা ও পরে অন্যান্য যোদ্ধারা তাদের অস্ত্র নামিয়ে রেখে রুশ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে শুরু করে।
রাশিয়ার ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, ইউক্রেইনীয় সামরিক বাহিনী প্রতিরোধকারীদের বলেছে যে তারা বের হয়ে এসে তাদের জীবন রক্ষা করতে পারে আর সম্ভবত আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সবাই চলে যাবে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ওই কারখানাটির ভূগর্ভস্থ স্থাপনা, যেখানে জঙ্গিরা লুকিয়ে ছিল, রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।”
গত কয়েকদিনে সেখানে অবস্থান নিয়ে থাকা মোট ২৪৩৯ জন প্রতিরোধকারী আত্মসমর্পণ করেছে বলে জানিয়েছে তারা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সার্জেই শোইগু প্রেসিডেন্ট পুতিনকে জানিয়েছেন যে মারিউপোল ও ইস্পাত কারখানা, উভয়ই এখন পুরোপুরি মুক্ত।