ইউক্রেইনে যুদ্ধাপরাধের প্রথম মামলায় রুশ সেনার দোষ স্বীকার

ইউক্রেইনে আগ্রাসনের সময় নিরস্ত্র এক বেসামরিক ইউক্রেইনীয়কে হত্যার অভিযোগ আদালতে স্বীকার করেছেন রুশ সেনা ভাদিম শিশিমারিন। বিচারে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা হতে পারে।

নিউজডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2022, 02:11 PM
Updated : 18 May 2022, 02:11 PM

ট্যাঙ্ক কমান্ডার ২১ বছরের শিমিমারিনের বিরুদ্ধে ‍অভিযোগ, আগ্রাসনের শুরুর দিকে তিনি ৬২ বছরের একজন ইউক্রেইনীয় ‍বৃদ্ধকে গুলি করে হত্যা করেন।

গত শুক্রবার শিশিমারিনকে কিইভে প্রাথমিক শুনানির জন্য হাজির করা হয়।

গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর শিশিমারিনের মামলাই ইউক্রেইনে রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের প্রথম মামলা। আরো মামলা বিচারের আপেক্ষায় আছে বলে জানান ইউক্রেইনের আইনজীবীরা।

মস্কো অবশ্য তাদের বাহিনীর হাতে বেসামরিক ইউক্রেইনীদের নিহত হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

শুনানির সময় একজন অনুবাদক শিশিমারিনকে রুশ ভাষায় সবকিছু বুঝিয়ে দিয়েছেন।

শিশিমারিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পূর্বের সুমি অঞ্চলের চুপাকহিভকা গ্রামের কাছে সাইকেল চালিয়ে আসতে থাকা এক বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেন।

বিবিসি জানায়, বুধবার আদালতের একটি ছোট্ট কক্ষে শিশিমারিনকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে আসেন ভারী অস্ত্রসজ্জিত নিরাপত্তারক্ষীরা।

আইনজীবীরা বলেন, শিশিমারিন রাশিয়ার একটি ট্যাঙ্ক বহরের একটি ইউনিটের নেতৃত্বে ছিলেন যখন তার ইউনিটির উপর পাল্টা হামলা হয়।

তিনি এবং আরো চার সেনা একটি গাড়ি চুলি করে সেখান থেকে পালিয়ে যান। চুপাকহিভকা গ্রামের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় ‍তারা বাইসাইকেলে থাকা একজন বৃদ্ধকে গুলি করে হত্যা করে।

আইনজীবীদের ভাষ্য অনুযায়ী, শিমিমারিনই ওই ব্যক্তিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং এজন্য একটি কালাশনিকভ অ্যাসল্ট রাইফেল ব্যবহার করেন।

ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এর আগে বলা হয়েছিল, তাদের এই মামলার বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।

শিশিমারিন দোষ স্বীকার করলেও তার বিরুদ্ধে আদালতের রায় এখনো আসেনি। ওই মামলার বিচার কাজ আগামীকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আদালত মুলতবি ঘোষণা করেছে।

আদালত কক্ষে যা হয়েছে:

বিবিসি জানায়, এদিন আদালতকক্ষে শিশিমারিনকে খানিকটা ভীত দেখাচ্ছিল। তিনি বেশিরভাগ সময় ‍মাথা নিচু করে ছিলেন এবং কাঁচের ওপার থেকে অনুবাদকের কথা মন দিয়ে শুনছিলেন।

তার কয়েক মিটার দূরে নিহত ব্যক্তির বিধবা স্ত্রী বসেছিলেন। শিশিমারিনকে যখন আদালত কক্ষে নিয়ে আসা হচ্ছিল তখন তিনি চোখ মুছছিলেন।

বিচারক শিশিমারিনের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘‘আপনি কী আপনার অপরাধ স্বীকার করেছেন?

শিশিমারিন বলেন, ‘‘হ্যাঁ।”

বিচারপক: সম্পূর্ণ রূপে?

শিশিমারিন: হ্যাঁ।