ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট সাউলি নিনিস্তোকে পুতিন বলেন, ফিনল্যান্ডের নিরাপত্তা নিয়ে ‘কোনো হুমকি নেই’।
ফিনল্যান্ড আনুষ্ঠানিকভাবে নেটোতে যোগ দেয়ার আবেদন করতে যাচ্ছে এবং খুব শিগগির এ ঘোষণা আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিবিসি জানায়, শনিবার ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট নিনিস্তো পুতিনকে ফোন দিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন।
পরে ক্রেমলিন থেকে এক বিবৃতিতে ফোনে পুতিন কী বলেছেন তা তুলে ধরা হয়।
বলা হয়, রুশ নেতা জোর দিয়েছে বলেছেন, ‘ফিনল্যান্ডের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ধরনের হুমকি নেই। এরপরও যদি তারা সামরিকভাবে নিরপেক্ষ থাকার ঐতিহ্যবাহী নীতির অবসান ঘটায় তবে সেটা ভুল হবে’।
পুতিন আরো বলেন, ‘‘দেশের রাজনৈতিক অভিযোজনে এই ধরনের পরিবর্তন রুশ-ফিনিশ সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যে সম্পর্ক বছরের পর বছর ধরে দুই ভালো প্রতিবেশীর চেতনা এবং সহযোগিতার মাধ্যমে গড়ে উঠেছে।’’
অন্যদিকে নিনিস্তো বলেছেন, ইউক্রেইনে আগ্রাসনসহ রাশিয়ার সাম্প্রতিক কিছু পদক্ষেপ কীভাবে ‘ফিনল্যান্ডের নিরাপত্তার পরিবেশে পরিবর্তন এনেছে’।
‘‘আমরা সরাসরি এবং খোলাখুলি আলোচনা করেছি এবং সেখানে কেউ কাউকে হুমকি দেয়নি। উত্তেজনা সৃষ্টি এড়িয়ে চলাকে সেখানে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।”
ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর ইউরোপের কয়েকটি দেশ নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে পড়ে গেছে। যার প্রেক্ষিতে তারা নেটোতে যোগ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে।
ফিনল্যান্ডের পাশাপাশি সুইডেনও তাদের নেটোতে যোগ দেওয়ার আগ্রহের বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছে।
রাশিয়ার সঙ্গে ফিনল্যান্ডের ১৩শ’ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। পূর্বের প্রতিবেশী রাশিয়ার সঙ্গে বিরোধপূর্ণ সম্পর্কের মুখোমুখি হওয়া এড়িয়ে যেতে ফিনল্যান্ড এখনো নেটোর বাইরে রয়েছে।
রাশিয়া এরইমধ্যে ফিনল্যান্ডে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। যাকে ওই ‘বদলার’ প্রাথমিক লক্ষণ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যদিও এক বিবৃতিতে রাশিয়ার বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান আরএও নরডিক এর কারণ হিসেবে পেমেন্ট সংক্রান্ত জটিলতার কথা বলেছে।
তবে রাশিয়া বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিলেও তাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন ফিনল্যান্ডের ন্যাশনাল গ্রিডের নির্বাহী রেইমা পাইভিনেন।
তিনি বলেন, তারা দেশের মোট বিদ্যুৎ সরবরাহের মাত্র ১০ শতাংশ রাশিয়া থেকে আমদানি করেন। রাশিয়া বিদ্যুৎ না দিলে তারা বিকল্প ব্যবস্থা দেখে নেবেন।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের তথাকথিত হুমকি মোকাবেলায় ১৯৪৯ সালে পশ্চিমা সামরিক জোট নেটো গঠন করা হয়।
প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, ইউক্রেইনের নেটোতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা তার প্রতিবেশী দেশটিতে আগ্রাসনের সিদ্ধান্তে যাওয়ার একটি অন্যতম কারণ।