নর্ডিক এসব দেশগুলো ‘অনেক সন্ত্রাসী সংগঠনের ঠিকানা’ হওয়ায় নেটো সদস্য তুরস্কের পক্ষে তাদের পরিকল্পনা সায় দেওয়া সম্ভব নয় বলে শুক্রবার ইস্তাম্বুলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট তায়িপ এরদোয়ান।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ৭০ বছর আগে নেটোতে যোগ দেওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটটির বৃদ্ধিতে তুরস্ক সমর্থন দিয়ে এসেছে, কিন্তু এবার তাদের বিরোধিতা সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারে কারণ নতুন সদস্য গ্রহণ করতে সব সদস্যের সম্মতি প্রয়োজন।
কুর্দি গোষ্ঠী পিকেকে ও ওয়াইপিজিসহ আঙ্কারা সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে গণ্য করে এমন গোষ্ঠীগুলোর বিষয়ে সুইডেন ও পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর ভূমিকার বারবার নিন্দা করে আসছে তুরস্ক। তুরস্কের মুসলিম ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেন ও তার অনুসারীদের যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান নিয়েও অসন্তুষ্ট দেশটি। আঙ্কারার অভিযোগ, গুলেনপন্থিরা ২০১৬ সালে অভ্যুত্থানের চেষ্টা করেছিল; তবে গুলেন ও তার সমর্থকরা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বৃহস্পতিবার ফিনল্যান্ড জানায়, তারা নেটো সদস্য পদের জন্য আবেদন করার পরিকল্পনা করেছে। সুইডেনও তাদের অনুসরণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাশিয়ার সীমান্ত ঘিরে নেটোর সম্প্রসারণে বাধা দেওয়ার লক্ষ্যেই প্রতিবেশী ইউক্রেইনে আক্রমণ করেছে রাশিয়া।
ইস্তাম্বুলে এরদোয়ান বলেন, “সুইডেন ও ফিনল্যান্ডে যা ঘটছে তার দিকে নজর রাখছি আমরা, কিন্তু আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী ইতিবাচক নয়।”
এর আগে গ্রিসকে সদস্য হিসেবে গ্রহণ করে নেটো ভুল করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
“তুর্কি হিসেবে আমরা একই ধরনের ভুলের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চাই না। আর স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোতো সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর জন্য অতিথিশালা। এমনকি তারা (সংগঠনগুলোর নেতারা) কিছু দেশের পার্লামেন্টেরও সদস্য। এদের সমর্থন দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়,” বলেন তিনি।
এর প্রতিক্রিয়ায় সুইডেন ও ফিনল্যান্ড বলেছে, এ বিষয়ে তারা তুরস্ক সরকারের সঙ্গে কথা বলবে।
শনিবার জার্মানিতে নেটোর এক বৈঠকে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোলোর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন লিনদে ও ফিনল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেক্কা হাভিস্তো।
নেটোর মহাসচিব ইয়েন্স স্তোলতেনবার্গ বলেছেন, নেটো জোটে ফিনল্যান্ডকে ‘উষ্ণতার সঙ্গে স্বাগত’ জানানো হবে। ফিনল্যান্ডকে ‘মসৃণ ও দ্রুত’ যোগদান প্রক্রিয়ায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
এরদোয়ানের মন্তব্যের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তুরস্ক ‘গুরুত্বপূর্ণ নেটো মিত্র’ এবং ‘রাশিয়া ও ইউক্রেইনের সংলাপ অব্যাহত রাখার চেষ্টায় তারা সহায়তা করছে ও ভূমিকা রেখে চলেছে’।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রেস সচিব জন কারবি বলেছেন, “আমরা এখানে (তুরস্কের) অবস্থান আরও ভালোভাবে স্পষ্ট করে তোলার জন্য কাজ করছি।”
আরও খবর: