পাকিস্তানের ‘দ্য ডন’ পত্রিকা জানায়, বুধবার হাম নিউজে অভিনেতা শান শাহিদকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইমরান এই অভিযোগ করেন। মার্কেটিং কোম্পানিগুলোকে রাজনীতিতে কাজে লাগানো নিয়ে তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। এর জবাবেই ইমরান তার চরিত্র হননের প্রসঙ্গ টানেন।
তিনি বলেন, “আমাকে মাফিয়াদের মোকাবেলা করতে হয়েছে। সবচেয়ে বড় মাফিয়া হল শরিফ মাফিয়া […] তারা সবসময়ই ব্যক্তিগত পর্যায়ে আমাকে আক্রমণ করে। কারণ, তারা ৩৫ বছর ধরে দুর্নীতিতে ডুবে আছে। যখনই কেউ তাদের এই দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে, তখনই তারা তার ব্যক্তিগত চরিত্রকে আক্রমণ করে।”
ইমরান আরও বলেন, তার সাবেক স্ত্রী জেমিমা গোল্ডস্মিথও অতীতে তাদের (শরিফ পরিবার) নিশানা হয়েছেন। তার ইহুদি যোগসাজশ বা ‘লবি’ আছে বলে তারা প্রচার চালিয়েছে। দেশ থেকে পুরাকালের টাইলস জেমিমা দেশের বাইরে নিয়ে গেছেন বলেও তার বিরুদ্ধে তারা মিথ্যা মামলা করেছে।
এ পর্যায়ে একটি বাণিজ্যিক বিরতির পর ইমরান খান আবার বলেন, ঈদের পরে তার চরিত্র হননের প্রস্তুতি নিয়েছে শরিফরা। ইমরান বলেন, “ঈদ শেষ হয়ে গেছে। আপনারা দেখতে পাবেন তারা আমার চরিত্র হননের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এ জন্য বিভিন্ন কোম্পানিকে ভাড়া করেছে। তারা আমার বিরুদ্ধে মালমসলা প্রস্তুত করছে।”
পাকিস্তানে বর্তমানে যে মন্ত্রিপরিষদ আছে, তার মধ্যে শতকরা ৬০ ভাগ সদস্যই মামলা থেকে জামিন পাওয়া বলে দাবি করেন ইমরান। তিনি বলেন, হামজা ও তার বাবা শহবাজ শরিফ জামিনে আছেন। মরিয়মও জামিনে। নওয়াজ শরিফ অভিযুক্ত হয়েছেন। তার ছেলেরা বিদেশে পালিয়ে আছে। তাহলে তাদের আর (অন্য) কী সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকবে?
তাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আছে তার জবাব তাদেরকে গণতন্ত্রের অধীনে দিতে হবে বলে দাবি করেন ইমরান খান। তিনি বলেন, জামিনে মুক্ত থেকে আপনি গণতন্ত্রের অংশ হতে পারেন না। কোনও পদ পেতে পারেন না।
ইমরান খানের অভিযোগ, “শরিফ পরিবার যে শত শত কোটি রুপি চুরি করেছে তার জবাবদিহি না করে তারা উল্টো তার (ইমরান) চরিত্র হননে নেমেছে। ইমরান খান প্রশ্ন তুলে বলেন- জেমিমার অপরাধ কি ছিল? তিনি আমার স্ত্রী ছিলেন! আর এখন তারা ফারাহ খানের পিছু নিয়েছে। তার অপরাধ, তিনি আমার স্ত্রী বুশরার ঘনিষ্ঠ ছিলেন।”
এখানেই থামেননি ইমরান। তিনি বলেন, “শরিফরা আরও প্রস্তুতি নিয়েছে। তারা সাবেক প্রধান বিচারপতি সাকিব নিসার এবং প্রয়াত বিচারক আরশাদ মালিকের মতো ‘টেপ’ বানাচ্ছে। এটি হচ্ছে মাফিয়া স্টাইল। আমি শুধু দেশবাসীকে বলতে পারি আপনারা অনুধাবন করুন, আপনি কারও নামে কুৎসা রটাতে চাইলে অনেক কোম্পানি আছে, যারা এ লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে পারে।”
বৃহস্পতিবার ইমরান খান শুক্রবার (৬ মে) থেকে সত্যিকারের মুক্তির জন্য বিশাল সমাবেশ করে প্রচার শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন। আর তার দল পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) মে মাসের শেষে রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চ করার ঘোষণা দিয়েছে।
এই আন্দোলনের আগেই জনগণের দৃষ্টিতে ইমরান খানের সম্মান হানি করতে তার চরিত্র হননের চক্রান্ত করছে শরিফরা। এমনটিই দাবি করেছেন ইমরান খান। তিনি বলেন, শরিফরা আগের মতোই এ কাজটি করছে। এই ধারা নতুন কিছু নয়।