এই সংখ্যা আগের দিনের পৌনে ৪ গুণ। শুক্রবার দেশটিতে যত রোগী শনাক্ত হয়েছিল, তার মধ্যে উপসর্গ মিলেছিল মাত্র ৪৭৬ জনের দেহে।
শনিবার উপসর্গধারী যে এক হাজার ৮০৭ কোভিড রোগী পাওয়া গেছে, তার মধ্যে এক হাজার ৪১২ জনই শনাক্ত হয়েছে জিলিনে; উত্তরপূর্বের এ প্রদেশ আগের দিনও মাত্র ১৩৪ উপসর্গধারী রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
অর্থ্যাৎ আগের দিনের তুলনায় শনিবার জিলিনে প্রায় ১১ গুণ বেশি উপসর্গধারী কোভিড রোগী মিলল।
শনিবার শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ১১৪ জন প্রথমে উপসর্গহীনদের তালিকায় ছিলেন; উপসর্গ ধরা পড়ার পর তাদেরকে রোগীর তালিকায় যুক্ত করা হয়।
চীনে উপসর্গ না থাকলে সংক্রমণের শিকার ব্যক্তিদের রোগীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় না।
দেশটিতে এখন প্রতিদিন যত কোভিড রোগী শনাক্ত হচ্ছে, তা বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় নগণ্য হলেও সংক্রমণের সাম্প্রতিক এ ঊর্ধ্বগতি কোথাও প্রাদুর্ভাবের খোঁজ পাওয়া মাত্র যত দ্রুত সম্ভব সংক্রমণ শূন্যে নামিয়ে আনার বেইজিংয়ের লক্ষ্যকে জটিল করে তুলতে পারে।
চীনে ওমিক্রনের দাপটের কারণে দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ যে কেউ নিজে নিজেই শনাক্ত করতে পারবে এমন র্যাপিড কিট কেনার অনুমতি দিয়েছে।
দেশটিতে মূলত স্বাস্থ্যকর্মীরাই নমুন সংগ্রহ করে নিউক্লিয়িক এসিড টেস্ট করতো, কিন্তু দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম ওমিক্রন মোকাবেলায় ওই কৌশল কার্যকর না হওয়ায় কর্তৃপক্ষকে এই ‘সেলফ টেস্টিং কিটের’ অনুমতি দিতে হয়েছে।
প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় জিলিনের প্রাদেশিক রাজধানী চাংচুনে আগেই লকডাউন দেওয়া হয়েছিল; শহরটিতে এখন গণ শনাক্তকরণ পরীক্ষা চলছে, একটি প্রদর্শনী কেন্দ্রকে এক হাজার ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পরিণত করারও কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
দক্ষিণের শহর শেনজেনে শনিবার উপসর্গধারী নতুন ৬০ রোগী শনাক্ত হয়েছে; ২০২০ সালের শুরুর দিকে চীনের কর্তৃপক্ষ দেশজুড়ে কোভিডের প্রাথমিক প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে আনার পর শহরটিতে আর কখনোই একদিনে এত রোগী পাওয়া যায়নি।
শেনজেনের ৯ জেলার সবগুলোতেই রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়া, ইনডোর অনুষ্ঠানস্থলগুলো সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে; জরুরি খাত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা বাদে অফিসের বাইরে থেকে কাজ করা গেলে সব প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত বাসা থেকে অফিস করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
কোভিড সুরক্ষা ও নিয়ন্ত্রণের কাজে ‘ভালো না করায়’ দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ডংগুয়ানের স্থানীয় সরকার ও কমিউনিস্ট পার্টির ৬ কর্মকর্তাকে তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে রোবার জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
চীনে শনিবার উপসর্গ নেই কিন্তু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এমন এক হাজার ৩১৫ জন শনাক্ত হয়েছে; আগের দিন এ সংখ্যা ছিল এক হাজার ৪৮।
নতুন কেউ মারা না যাওয়ায় চীনে সরকারি হিসাবে কোভিডে মৃত্যু ৪ হাজার ৬৩৬-এই আছে।
মহামারী শুরুর পর শনিবার পর্যন্ত চীনে উপসর্গধারী মোট রোগী শনাক্ত হয়েছে এক লাখ ১৫ হাজার ৪৬৬ জন; এদের মধ্যে স্থানীয়ভাবে সংক্রমিতদের পাশাপাশি বাইরে থেকে চীনের মূল ভূখণ্ডে যাওয়ার পর শনাক্তরাও আছেন।