বুরকিনা ফাসোর প্রেসিডেন্টকে পদচ্যুত করেছে সেনাবাহিনী

বুরকিনা ফাসোর সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা প্রেসিডেন্ট রোচ মার্ক ক্রিশ্চিয়ান কাবোরেকে পদচ্যুত করার পাশাপাশি সংবিধান স্থগিত করে সরকার ও জাতীয় পরিষদ ভেঙে দিয়েছে এবং দেশের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Jan 2022, 04:18 AM
Updated : 25 Jan 2022, 04:18 AM

সোমবার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পল-হেনরি সানদাওগো দামিবা স্বাক্ষরিত এক ঘোষণায় এসব কথা জানানো হয়েছে। সেনাবাহিনীর আরেক কর্মকর্তা ঘোষণাটি পড়ে শোনান, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ঘোষণায় দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করে বলা হয়, কাবোরে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে এবং ইসলামপন্থিদের বিদ্রোহসহ দেশ যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে সেগুলোতে কার্যকরভাবে সাড়া দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।

কোনো সহিংসতা ছাড়াই সেনাবাহিনী ক্ষমতা গ্রহণ করেছে এবং যাদের আটক করা হয়েছে তাদের নিরাপদ একটি স্থানে রাখা হয়েছে বলে ঘোষণায় জানানো হয়।

এর আগে কখনও শোনা যায়নি এমন একটি সংগঠন ‘প্যাট্রিয়টিক মুভমেন্ট ফর সেইফগার্ড এন্ড রেস্ট্রোরেইশন’ নামে বিবৃতিটি দেওয়া হয়েছে, ফরাসি ভাষায় যার সংক্ষিপ্ত রূপ ‘এমপিএসআর’।

বিবৃতিতে বলা হয়, “এমপিএসআর, যার মধ্যে সেনাবাহিনীর সব বিভাগ অন্তর্ভুক্ত, আজ প্রেসিডেন্ট কাবোরের পদ শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

এই নিয়ে গত ১৮ মাসের মধ্যে পশ্চিম আফ্রিকার তৃতীয় আরেকটি দেশে সেনা অভ্যুত্থানে সরকারের পতন হল। এর আগে বুরকিনা ফাসোর প্রতিবেশী মালি ও গিনিতে একই ধরনের ঘটনা ঘটে। 

গত বছর মধ্য আফ্রিকার দেশ শাদের প্রেসিডেন্ট ইদ্রিস দেবি বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ের সময় যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হওয়ার পর সামরিক বাহিনী দেশটির ক্ষমতা গ্রহণ করেছিল।

এর আগে সোমবার রয়টার্স জানিয়েছিল, প্রেসিডেন্ট কাবোরে একটি সেনা ক্যাম্পে বিদ্রোহী সৈন্যদের হাতে আটক হয়েছেন।

রোববার রাতে রাজধানী ওয়াগাদুগুতে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের চারপাশে তুমুল গোলাগুলির খবর আসে। তারপর প্রেসিডেন্টকে আটক করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া যায়।

রোববার দেশটির বেশ কয়েকটি সামরিক ক্যাম্প থেকে কয়েক ঘণ্টা ধরে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। ওই সময় একটি সামরিক অভ্যুত্থানের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়লেও সরকার তা অস্বীকার করেছিল। তবে ওই সব ক্যাম্পের বিদ্রোহী সেনারা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে তাদের লড়াইয়ে আরও সমর্থন দাবি করছিল বলে রয়টার্স জানিয়েছে।

সম্প্রতি পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটিতে জঙ্গিরা কিছুদিন পরপরই বেসামরিক ও সেনাদের হত্যা করছিল। এতে দেশজুড়ে হতাশা ছড়িয়ে পড়ে। এসব জঙ্গিদের কোনো কোনো অংশের সঙ্গে ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও আল কায়েদার সম্পর্ক আছে।

ক্ষুব্ধ প্রতিবাদকারীরা রোববার রাস্তায় বের হয়ে এসে বিদ্রোহীদের প্রতি সমর্থন জানায় ও প্রেসিডেন্ট কাবোরের রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে তছনছ করে।