আগ্নেয় ছাই ও সুনামিতে ক্ষতিগ্রস্ত টোঙ্গার ৮৪ শতাংশ মানুষ

টোঙ্গার সরকার জানিয়েছে, তাদের ১ লাখ ৫ হাজার জনসংখ্যার প্রায় ৮৪ শতাংশ আগ্নেয় ছাই ও জলমগ্ন একটি আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে সৃষ্ট সুনামিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Jan 2022, 11:36 AM
Updated : 24 Jan 2022, 11:36 AM

ওই আগ্নেয়গিরি থেকে ধেয়ে আসা সুনামির ঢেউ গত সপ্তাহে টোঙ্গাকে ভাসিয়ে নিয়েছিল, এতে দেশটির উপকূল, গ্রামগুলো ও বহু ভবন ধ্বংস হয়েছে। 

সুনামিতে যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে তার বাইরে আর কারও মৃত্যুর কথা জানায়নি দেশটির সরকার। তবে দুই ডজন লোক আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা, যাদের অধিকাংশই নোমুকা দ্বীপের বাসিন্দা।

নিহত তিন জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের একজন নোমুকার ৪৯ বছর বয়সী এক নারী, আরেকজন ম্যাঙ্গো দ্বীপের ৬৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ ও অপরজন ৫০ বছর বয়সী এক ব্রিটিশ নারী। 

টোঙ্গায় অস্ট্রেলিয়ার কূটনৈতিক মিশন সোমবার দেশটির কর্তৃপক্ষের সবশের্ষ বিবৃতি শেয়ার করেছে, কিন্তু বিবৃতিটির তারিখ শুক্রবারের ছিল বলে বিবিসি জানিয়েছে।

ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দ্বীপগুলোর অন্যতম ম্যাঙ্গোর ৬২ জন বাসিন্দা ‘তাদের বাড়িঘরসহ সর্বস্ব হারিয়েছেন’, তাই তাদের নোমুকায় পুনর্বাসিত করা হবে।

সুনামিতে সেখানকার একমাত্র ক্লিনিকটি ভেসে যাওয়ায় উদ্ধারকারীরা ম্যাঙ্গোতে একটি অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপন করেছেন।

তবে দেশটির সরকার জানিয়েছে, খাবার ও অন্যান্য সরবরাহের অভাব থাকায় সেখানকার অনেক বাসিন্দাকেই নোমুকা থেকে মূল দ্বীপ টোঙ্গাটাপুতে নিয়ে আসা লাগতে পারে।  

এখনও দ্বীপগুলোতে সুপেয় পানিই প্রধান চাহিদা। তবে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগ্নেয় ছাই পড়া সত্ত্বেও গত কয়েকদিনের পরীক্ষায় ভূগর্ভস্থ পানি ও বৃষ্টির পানি পানযোগ্য বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

গত সপ্তাহ থেকে বিদেশি ত্রাণ নিয়ে জাহাজ ও বিমানগুলো টোঙ্গায় আসতে শুরু করে। দেশটির প্রধান বিমানবন্দরের রানওয়ে ঘন আগ্নেয় ছাইয়ে ঢাকা পড়ে থাকায় ফ্লাইট চলাচল বন্ধ ছিল। স্থানীয়রা ছাই পরিষ্কার করার পর ফ্লাইট চলাচল ফের শুরু হয়।

নিউ জিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া তাদের বিমান বাহিনী ও নৌবাহিনীর জাহাজগুলো ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক ত্রাণ সরবরাহে নেতৃত্ব দিচ্ছে। দ্বীপপুঞ্জটিকে কোভিড-১৯ সংক্রমণ মুক্ত রাখতে স্থানীয়দের সংস্পর্শ ছাড়াই তারা দেশটিতে পানি, খাবার, পরিচ্ছন্নতা সামগ্রী, তাঁবু এবং পানি বিশুদ্ধকরণ ও টেলিযোগাযোগ মেরামতের যন্ত্রপাতি সরবরাহ করছে।   

দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের এ প্রত্যন্ত দ্বীপপুঞ্জটির ইন্টারনেট যোগাযোগের একমাত্র ফাইবার অপটিক ক্যাবলটি সাগর তলে অগ্ন্যুপাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তখন টানা পাঁচ দিন দেশটির সঙ্গে বর্হিবিশ্বের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে ছিল। 

গত সপ্তাহে জোড়াতালি দেওয়া একটি টেলিফোন লাইন ফের চালু করার পর ‘সীমিত আন্তর্জাতিক ফোন কল’ ফের সচল হয়েছে। কিন্তু এখনও প্রধান দ্বীপ টোঙ্গাটাপুর সঙ্গে অন্যান্য দ্বীপের যোগাযোগ ‘কঠিন চ্যালেঞ্জ’ হয়ে আছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে দেশটির সরকার।