টোঙ্গায় সুনামি: ব্রিটিশ নারী নিখোঁজ

দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে পানির নিচে একটি আগ্নেয়গিরিতে উদ্গীরণের পর সৃষ্ট সুনামিতে টোঙ্গায় বসবাস করা এক ব্রিটিশ নারী নিখোঁজ হয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Jan 2022, 01:11 PM
Updated : 17 Jan 2022, 01:11 PM

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টে তার বন্ধু ও স্বজনরা এ তথ্য জানান বলে জানিয়েছে বিবিসি। ওই নারীর নাম অ্যাঞ্জেলা, বয়স ৫০। স্বামীর নাম জেমস গ্লোভার।

অ্যাঞ্জেলার স্বজনদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, চার ফুট উঁচু ঢেউ যখন টোঙ্গা উপকূলে আঘাত হানে তখন গ্লোভার গাছে চড়ে প্রাণ রক্ষা করতে পারলেও অ্যাঞ্জেলা তার কুকুরসহ ভেসে যান।

যুক্তরাজ্যে জন্ম নেওয়া অ্যাঞ্জেলা টোঙ্গার রাজধানী নুকু’আলোফায় একটি ট্যাটু পার্লারের সহ-ব্যবস্থাপক। পাশপাশি তিনি কুকুরদের একটি আশ্রয়কেন্দ্র চালান।

গত শনিবার প্রশান্ত মহাসাগরে ডুবে থাকা হুঙ্গা-টোঙ্গা-হুঙ্গা হা’আপেই আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাতের পর সৃষ্ট সুনামি টোঙ্গার উপকূলগুলোতে আঘাত হানে।

সঙ্গে সঙ্গে পুরো দ্বীপের ফোন ও ইন্টারনেট লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। হুঙ্গা-টোঙ্গা-হুঙ্গা হা’আপেই আগ্নেয়গিরি থেকে টোঙ্গার রাজধানীর দূরত্ব মাত্র ৬৫ কিলোমিটার।

সুনামিতে প্রধান দ্বীপ টোঙ্গাটাপুর পশ্চিম উপকূল বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানায় বিবিসি। পুরো দ্বীপ থকথকে ছাইয়ের পুরো চাদরে ঢেকে গেছে।

দ্বীপে ঠিক কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। দ্বীপে ইন্টারনেট ও টেলিফোনে যোগাযোগ এখনো সীমিত রয়েছে।

গ্লোভারের ভাই নিক এলিনি বিবিসিকে জানান, অ্যাঞ্জেলার খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরেক ব্যক্তি অ্যাঞ্জেলা ও গ্লোভারকে নিজের চাচী ও চাচা বলে জানান।

তিনি বলেন, এই দম্পতি তাদের কুকুরগুলোকে আনতে বাড়িতে গিয়েছিলেন। ঠিক ওই সময়ই ঢেউ উপকূলে আছড়ে পড়ে। ২০১৫ সালে টোঙ্গায় বসবাস শুরু করার আগে অ্যাঞ্জেলা লন্ডনে একটি বিজ্ঞাপন সংস্থায় কাজ করতেন। ব্রাইটনে তিনি বড় হয়েছেন।

কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে তাকে টোঙ্গা অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির ভাইস-প্রেসিডেন্ট বলে উল্লেখ করা হয়। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে ছড়িয়ে ছটিয়ে থাকা ১৭০টি বেশি দ্বীপ নিয়ে গঠিত টোঙ্গা। আয়তনে দেশটি প্রায় জাপানের সমান।

ত্রাণ এবং উদ্ধার সংস্থাগুলো জানায়, সুনামিতে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত মৃত্যুর কোনো খবর নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সুনামিতে ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনার জন্য সোমবার অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ড সেখানে পর্যবেক্ষণকারী বিমান পাঠিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার প্রশান্ত মহাসাগর বিষয়ক মন্ত্রী জেড সেসেলা জানিয়েছেন, শনিবারের উদ্গীরণ ও সুনামিতে টোঙ্গায় বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে প্রাথমিক প্রতিবেদনগুলো থেকে ধারণা পাওয়া গেছে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ সৈকতগুলো পরিদর্শন করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার কথা জানিয়েছে।