ইউক্রেইন নিয়ে আলোচনা ‘অচলাবস্থায়’, যুদ্ধের ঝুঁকি দেখছে পোল্যান্ড

গত তিন দশকের মধ্যে এখনই ইউরোপে যুদ্ধের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিবিগনিভ রাউ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Jan 2022, 10:43 AM
Updated : 14 Jan 2022, 10:43 AM

বৃহস্পতিবার ৫৭ দেশের জোট অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন ইন ইউরোপের (ওএসসিই) নিরাপত্তা ফোরামে তিনি এ মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ইউক্রেইন নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও এর ইউরোপীয় মিত্রদের মতবিরোধ এবং আলোচনায় অচলাবস্থা এই ঝুঁকির সৃষ্টি করেছে বলেও রাউ ইঙ্গিত দিয়েছেন।

এদিকে রাশিয়া বলছে, আলোচনা ‘অচলাবস্থায় পৌঁছালেও’ এখনি কূটনৈতিক সমাধানের চেষ্টা ছেড়ে দিচ্ছে না তারা। তবে উত্তেজনা প্রশমিত না হলে বিকল্প পদক্ষেপ কী হতে পারে, তা নিয়ে সামরিক বিশ্লেষকরা প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছেন।

হোয়াইট হাউস বলছে, ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসনের সম্ভাবনা এখনও প্রকট; এ আগ্রাসনকে ন্যায্যতা দিতে অজুহাত দাঁড় করানোরও চেষ্টা করতে পারে তারা।

“যুদ্ধের দামামা আরও জোরাল হচ্ছে। কথার লড়াই তীব্র হচ্ছে,” ভিয়েনায় রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার পর বলেছেন ওএসসিই-তে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মাইকেল কার্পেন্টার।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সুলিভান বলেছেন, “ইউক্রেইনে সামরিক আগ্রাসনের সম্ভাবনা প্রবল। নতুন আলোচনার কোনো তারিখ ঠিক হয়নি। আমাদের প্রথমে মিত্র ও অংশীদারদের সঙ্গে কথা বলতে হবে।”

রাশিয়া পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে ইউক্রেইনকে নেটোতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে না এমন প্রতিশ্রুতি চাইছে; পূর্ব ইউরোপ থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটকে পিছু হটতেও বলছে তারা।

যুক্তরাষ্ট্র মস্কোর এসব দাবিকে পাত্তা দিতে নারাজ।

“এই মুহুর্তে এটা সত্যিই হতাশাজনক,” ওএসসিই-র বৈঠক শেষে এমনটাই বলেছেন রুশ রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার লুকাশেভিচ।

এ নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে তিনবার রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমাদের বৈঠক হলেও উত্তেজনা প্রশমনে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের অগ্রগতি দেখা যায়নি। 

রাশিয়া তার নিরাপত্তার বিষয়ে যে ‘লাল দাগ’ টেনে দিয়েছে তা নিয়ে দুই পক্ষ একমত হতে না পারলে ‘মারাত্মক পরিণতির’ ব্যাপারেও সতর্ক করেছেন লুকাশেভিচ।

মস্কো কূটনৈতিক সমাধানের চেষ্টা ছেড়ে দেবে না, বরং এর গতি আরও বাড়াবে বলে আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।

পশ্চিমারা রাশিয়াকে ইউক্রেইন সীমান্ত থেকে সৈন্য সরিয়ে নিতে বললেও তাতে কান দিচ্ছে না মস্কো; পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো থেকে নেটোর সরে যাওয়ার যে দাবি তোলা হয়েছে, তা শোনা না হলে পাল্টা প্রতিক্রিয়ারও হুমকি দিয়ে রেখেছে তারা।

বৃহস্পতিবার ভিয়েনায় বৈঠকের আগে বুধবার ব্রাসেলসে রাশিয়া-নেটো সম্মেলন এবং সোমবার জেনিভাতে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র বৈঠক হয়েছিল।

রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ বলেছেন, একই বিষয় নিয়ে সামনে ফের অলোচনায় বসার কোনো কারণ দেখছেন না তিনি।

ইউক্রেইন পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে কী কী বিকল্প আছে, রুশ সামরিক বিশেষজ্ঞরা তা প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সরবরাহ করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

রাশিয়া কিউবা ও ভেনিজুয়েলায় ‘সামরিক অবকাঠামো’ মোতায়েন করতে পারে কিনা- আরটিভিআই টিভিতে রিয়াবকভের কাছে এমন প্রশ্ন গেলে তার জবাবে পরিষ্কার কিছু বলেননি রুশ এ মন্ত্রী।

এদিকে রাশিয়া ইউক্রেইনে হামলা চালালে পুতিনসহ রাশিয়ার সরকার ও সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যাপারে মার্কিন সেনেটের ডেমোক্র্যাটদের প্রস্তাবের কড়া সমালোচনা করেছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ।

পুতিনের উপর নিষেধাজ্ঞা হবে সম্পর্ক ছিন্ন করার সমতুল্য, বলেছেন তিনি।