কাজাখস্তানে বিক্ষোভ দমনে গুলি করে হত্যার নির্দেশ

কাজাখস্তানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ সহিংস পন্থায় দমনের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীকে কোনও সতর্কীকরণ ছাড়াই গুলি চালিয়ে ‘দস্যু’ এবং ‘সন্ত্রাসীদের’ হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট কাসেম জোমার্ট তোকায়েভ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Jan 2022, 11:56 AM
Updated : 7 Jan 2022, 11:56 AM

শুক্রবার তিনি এই নির্দেশ দেন। টিভিতে সম্প্রচারিত এক ভাষণে তোকায়েভ বলেছেন, দেশের মূল নগরী আলমাতিতে হামলা চালিয়েছে ২০ হাজারের মতো ‘দস্যু’। তারা রাষ্ট্রের সম্পত্তি ধ্বংস করছে।

জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে কাজাখস্তানে শুরু হওয়া বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে এই আলমাতি নগরী। ‘দস্যু-সন্ত্রাসীরাই’ এই বিক্ষোভ-সংঘর্ষ,অস্থিরতার হোতা বলে অভিযোগ প্রেসিডেন্টের।

বিবিসি জানায়, দেশে অস্থিরতার জন্য তোকায়েভ মূলত বিদেশে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ‘সন্ত্রাসীদের’ দায়ী করেছেন। যদিও এর কোনও প্রমাণ তিনি দেননি।

কাজাখ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত চলমান অস্থিরতায় ২৬ জন ‘সশস্ত্র অপরাধী’ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর ১৮ জন সদস্য নিহত হয়েছে।

টিভিতে এক ভাষণে তোকায়েভ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, “এর কোনও মানে হয় না। অপরাধী, খুনিদের সঙ্গে আমরা কী ধরনের আলোচনা করতে পারি?”

“আমাদেরকে স্থানীয় এবং বিদেশি সশস্ত্র এবং ভালভাবে প্রস্তুত হয়ে আসা দস্যু, বিশেষত সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করতে হচ্ছে। তাই আমাদের তাদেরকে ধ্বংস করে ফেলতে হবে। সেটি শিগগিরই করা হবে।”

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, শুক্রবার সকালে নিরাপত্তা বাহিনী আলমাতি নগরীর রাস্তার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখলেও শুনতে পাওয়া গেছে গুলির শব্দ।

টিভি ভাষণে প্রেসিডেন্ট তোকায়েভ বলেছেন, “জঙ্গিরা এখনও তাদের অস্ত্র সমর্পণ করেনি। তারা অপরাধ করেই যাচ্ছে কিংবা এর জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে এর ইতি টানতে হবে। যে আত্মসমর্পণ করবে না তাকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে।”

“আমি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে এবং সেনাবাহিনীকে কোনও সতর্কীকরণ ছাড়াই গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছি।”

কাজাখস্তানে প্রথম দিকে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হলেও পরে রাজনৈতিক নানান অসন্তোষও তাতে যোগ হয়েছে। প্রেসিডেন্ট দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন, যার ভেতর রাত্রিকালীন কারফিউর পাশাপাশি আছে গণজমায়েতে নিষেধাজ্ঞাও।

দেশকে স্থিতিশীল করতে প্রেসিডেন্ট সিএসটিও-র সহায়তা চেয়েছিলেন।সামরিক জোট সিএসটিও-তে রাশিয়া এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত ৫টি দেশ আছে।

টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট তোকায়েভ বলেছেন, রাশিয়া এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর শান্তিরক্ষী বাহিনী তার অনুরোধে কাজাখস্তানে পৌঁছেছে। এ বাহিনী সাময়িকভাবে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।

রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন কালেক্টিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (সিএসটিও) প্রায় ২,৫০০ সেনা কাজাখস্তানে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। সেনা পাঠানোয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘বিশেষ ধন্যবাদ’ জানিয়েছেন তোকায়েভ।