শনিবার ইংল্যান্ডের লিভারপুলে জি-৭ জোটের অন্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি যত দ্রুত সম্ভব চুক্তিটির পতন ঠেকানোর তাগিদ দেন।
যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে এনে চুক্তিটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ইরান ও বিশ্বশক্তিগুলোর মধ্যে আলোচনা কিছুদিনের বিরতি শেষে পুনরায় শুরু হয়েছে।
“সময় শেষ হয়ে আসছে; আমাদের যে অগ্রগতি নেই, তা গত দিনগুলোতে দেখা গেছে,” লিভারপুলে সাংবাদিকদের বলেন বেরবক।
জার্মান এ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ইরান এমন একটা অবস্থান নিয়ে আলোচনা ফের শুরু করেছে যা পুরো আলোচনাকেই ছয় মাস পিছিয়ে দিয়েছে।
ইরানে পশ্চিমাবিরোধী হিসেবে খ্যাত রাজনীতিক ইব্রাহিম রাইসি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ৫ মাস বিরতি দিয়ে ভিয়েনায় নতুন দফার এ আলোচনা শুরু হয়েছে।
পরমাণু চুক্তির এ আলোচনা এগিয়ে নিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে শুক্রবার যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ‘ফলপ্রসূ’ বৈঠক হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
জি৭ দেশগুলোর মধ্যে এ বিষয়ে ‘নিবিড় আলোচনা’ হয়েছে এবং তারা তাদের অবস্থানে ঐক্যবদ্ধ বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
আলোচনায় বসতে ইরান বিষয়ক মার্কিন বিশেষ দূত রবার্ট মালে ফের ভিয়েনায় যাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ইরানের কর্মকর্তারা এর আগে বলেছিলেন, তারা তাদের কঠোর অবস্থানেই অটল আছেন।
২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত ওই জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) চুক্তিতে পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিতে লাগাম টানার শর্তে তেহরানের ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।
পশ্চিমা দেশগুলোর ভয়, ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচিকে কাজে লাগিয়ে পরমাণু অস্ত্র বানিয়ে ফেলবে। তেহরান অবশ্য সবসময়ই এ আশঙ্কাকে অমূলক বলে আসছে।
শনিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি ভিয়েনায় পরমাণু চুক্তির আলোচনায় তেহরান ‘আন্তরিক’ বলে মন্তব্য করেছেন, জানিয়েছে ইরানি বার্তা সংস্থা ইরনা।
অস্ট্রিয়ার এ রাজধানীতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের কর্মকর্তাদের মধ্যে যে পরোক্ষ আলোচনা চলছে, তার লক্ষ্য হচ্ছে উভয়পক্ষ যেন ২০১৫ সালের চুক্তিতে যেসব শর্ত ছিল সেগুলো মানা শুরু করে।
তেহরান ওয়াশিংটনের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে আপত্তি জানানোর পর ভিয়েনায় এ আলোচনায় ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, রাশিয়া ও চীনের কূটনীতিকদের যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পালা করে কথা বলতে হচ্ছে।