কেন্দ্র থেকে কোভিশিল্ড এর জন্য পর্যাপ্ত অর্ডার না পাওয়ার জেরেই সেরাম এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড টিকা কোভিশিল্ড এ পর্যন্ত ভারতে প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষকে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সেরাম ইন্সটিটিউট প্রতিমাসে ২৫ কোটি ডোজ টিকা তৈরি করছে।
বিবিসি জানায়, জানুয়ারি থেকে ভারতের প্রাপ্তবয়স্ক অর্ধেক মানুষকে পূর্ণ ডোজ কোভিড টিকা দেওয়া হয়েছে।
ভারতের সংবাদমাধ্যমকে সেরাম সিইও আদর পুনাওয়ালা বলেছেন, "আমি এমন এক দ্বিধায় আছি, যা আগে কখনও কল্পনা করিনি। আমরা প্রতি মাসে ২৫ কোটি ডোজ টিকা তৈরি করছি। কিন্তু এখন তা কমাতে হচ্ছে। ভাল বিষয় এটাই যে, দেশে অনেকের এরই মধ্যে দুটি করে ডোজ নেওয়া হয়ে গেছে। আর স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের অর্ডারের সব টিকা আমরা এক সপ্তাহ সময়ের মধ্যেই তৈরি করে ফেলব।"
"হাতে অন্য কোনও অর্ডার নেই।তাই আপাতত কোভিশিল্ডের উৎপাদন অন্তত ৫০ শতাংশ কমিয়ে দিচ্ছি। এরপর আবার অর্ডার আসলে তখন উৎপাদন বাড়ানোর দিকে নজর দেব। আট মাস ধরে আমরা টিকা রপ্তানি করতে পারিনি। অন্যান্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্য দেশ টিকা সরবরাহ করেছে। একটা বড় বাজার হারিয়েছি আমরা।"
ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত এপ্রিলে দেশীয়ভাবে টিকার চাহিদা মেটাতে টিকা রপ্তানি বন্ধ করেছিল সেরাম ইন্সটিটিউট। আন্তর্জাতিক কোভ্যাক্স প্রোগ্রামের আওতায় বিশ্বে সেরাম ইন্সটিটিউটই সবচেয়ে বেশি টিকা সরবরাহ করে থাকে। গত অক্টোবর থেকে ভারতের এই ফার্মটি আবার টিকা রপ্তানি শুরু করেছে।
এবার উৎপাদন কমানোর কথা জানালেও সেরাম সিইও আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, সংগ্রহে টিকা থাকবে না, এমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি হতে দিতে চান না তিনি। তাই যখনই দরকার হবে, তখনই পর্যাপ্ত টিকা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করার বিষয়টিও মাথায় রাখা হবে।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, সেরাম এখন কোভিড টিকার বুস্টার ডোজ তৈরির দিকে নজর দিচ্ছে। যারা কোভিশিল্ডের দুটি করে ডোজ নিয়েছেন তাদের বুস্টার ডোজের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠিও দিয়েছে সেরাম।
তবে কোভিড টিকার বুস্টার ডোজ নিয়ে টিকাকরণ সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শদাতা গোষ্ঠীর বৈঠকে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। শিশুদের টিকাকরণ নিয়েও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়। ওমিক্রন নিয়ে উদ্বেগ বাড়তে থাকায় ভারতে চিকিত্সকদের একটি অংশ বুস্টার ডোজের দাবিতে সরব হয়েছে।