শনিবার জাভা দ্বীপের সর্বোচ্চ এই আগ্নেয়গিরি থেকে উত্তপ্ত ঘন ছাই ও ধোঁয়ার বিশাল কুণ্ডুলি উৎক্ষিপ্ত হয়ে আশপাশের গ্রামগুলো ঢেকে দেয়, এতে ১৪ জনের মৃত্যু হয় এবং বহু মানুষ আহত হন।
উপর থেকে নেওয়া ফুটেজে বিস্তৃত এলাকা ঘন ছাইয়ে ঢাকা পড়ে আছে এমনটি দেখা গেছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
সামরিক কর্মকর্তারা, পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা হাত দিয়ে ছাই, কাদা সরিয়ে আটকা পরা লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন; কিন্তু বৃষ্টির কারণে উদ্ধারকাজে বিঘ্ন ঘটছে।
সোমবার সেমেরু আগ্নেয়গিরি পর্যবেক্ষণাগারের প্রধান লিসওয়ান্তো স্থানীয়দের পর্বতটি থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা নিয়ে সতর্ক করেছেন। উদ্বিগ্ন বাসিন্দারা তাদের জিনিসপত্র ও গবাদিপশু ঠিক আছে কিনা দেখতে বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন, এমন খবর প্রকাশ হওয়ার পর এই সতর্কতা জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, “মাউন্ট সেমেরুর পরিস্থিতি এখনও লেভেল টু-তে আছে, এর অর্থ সম্ভাব্য হুমকি এখনও বজায় আছে, তাই লোকজনের আরও বেশি সতর্ক থাকা দরকার।”
উদগীরণে ৫০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন, এদের অধিকাংশই দগ্ধ হয়েছেন। নেমে আসা লাভার প্রবাহে লুমাজাং জেলার দুটি এলাকার সঙ্গে মালাং শহরকে সংযোগকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু ধ্বংস হয়ে গেছে।
রয়টার্সের একজন প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক জানিয়েছেন, সুম্বুলউলু এলাকায় আগ্নেগিরির ছাইয়ে অর্ধেক চাপা পড়া দুটি ট্রাক উদ্ধারের প্রচেষ্টা ঝড়ো বাতাসের কারণে মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়।
বাস্তুচ্যুত হাজারেরও বেশি মানুষের জন্য লঙ্গরখানা ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র খোলা হয়েছে। দুর্গত এলাকার উদ্দেশ্যে চাল, কম্বল, কাপড়চোপড় ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ত্রাণ প্যাকেজ পাঠানো হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার প্রায় ১৩০টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরির মধ্যে সেমেরু একটি। জাভা দ্বীপে ৩৬০০ মিটার উঁচু এ আগ্নেয়গিরি থেকে গত জানুয়ারিতেও উদগীরণ হয়েছিল, তবে তখন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
‘প্যাসিফিক রিং অব ফায়ার’ বা প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলার ওপর ছড়িয়ে থাকা বহু দ্বীপের দেশ ইন্দোনেশিয়া অত্যন্ত ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। কয়েকটি টেকটনিক প্লেটের প্রান্তসীমা রয়েছে ওই এলাকায়, ফলে সেখানে ঘন ঘন ভূমিকম্প হয় এবং এ কারণে সেখানে অনেকগুলো আগ্নেয়গিরির সৃষ্টি হয়েছে।