পাকিস্তানে এক কারখানায় শ্রীলঙ্কান ব্যবস্থাপককে হত্যা

পাকিস্তানের শিয়ালকোটে এক কারখানায় ধর্মীয় অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে শ্রীলঙ্কান এক ব্যবস্থাপককে নির্যাতনের পর পুড়িয়ে হত্যা করেছে শ্রমিকরা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Dec 2021, 07:55 PM
Updated : 3 Dec 2021, 07:55 PM

শুক্রবার সকালে পাঞ্জাবের শিল্প অধ্যুষিত শহর শিয়ালকোটের একটি বেসরকারি কারখানায় ‘ভয়ঙ্কর’ হত্যার এ ঘটনা ঘটে; যেটির নিন্দা জানিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, এটি তার দেশের জন্য লজ্জার।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, আনুমানিক ৪০ বছর বয়সী ওই ব্যবস্থাপকের নাম প্রিয়ান্থা কুমারা। কারখানার ভেতরে তাকে পিটিয়ে নির্যাতনের পর পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।

শিয়ালকোটের এক পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স লিখেছে, স্পর্শকাতর এ ঘটনায় ওই পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করতে চাননি। তিনি জানান, হামলাকারীদের দাবি শ্রীলঙ্কান ওই ব্যবস্থাপক ‘ইসলামিক পবিত্র বাণী’ লেখা একটি পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে ধর্মের অবমাননা করেছেন।

পাঞ্জাবের প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র হাসান খাওয়ার ওই ব্যবস্থাপককে কারখানার শ্রমিকরা নির্যাতন করেছে জানিয়ে বলেন, এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় ৫০ জনকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রদেশের পুলিশের মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রধান সন্দেহভাজন আক্রমণকারীসহ শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ভিডিওতে দেখা গেছে এক ব্যক্তি নিহত শ্রীলঙ্কানকে নির্যাতন করছে এবং অন্যদের উত্তেজিত করে তুলছে।

রাতে এক টুইটে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এ হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে এ ঘটনার তদন্ত কার্যক্রম দেখভাল করছেন। এতে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এ হত্যাকাণ্ডকে ভয়ঙ্কর হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, “শ্রীলঙ্কান ব্যবস্থাপককে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনা পাকিস্তানের জন্য লজ্জার দিন।“

পাকিস্তানের রপ্তানিমুখী শিল্পের বেশির ভাগ কারখানা শিয়ালকোটে অবস্থিত। এ ঘটনার পর টেলিভিশন ফুটেজে নগরীর রাস্তায় হাজার হাজার মানুষকে দেখা গেছে বলে রয়টার্স লিখেছে।

রয়টার্সের এ প্রতিবেদন বলছে, হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনার তীব্রতায় দেশটির ক্ষমতাধর সেনাবাহিনীও নিন্দা জানিয়ে এক বিবৃতি দিয়েছে। এতে এ ঘটনাকে ‘ঠাণ্ডা মাথায় খুন’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সেনাপ্রধান এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে বেসরকারি প্রশাসনকে পুরোদমে সহায়তার নির্দেশ দিয়েছেন।

রয়টার্স লিখেছে, ধর্ম অবমাননা পাকিস্তানের আইনে একটি বড় ধরনের অপরাধ, যেটির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এরপরও প্রায়ই জনতার হাতে মৃত্যুর এমন ঘটনার সংবাদ প্রায়ই পাওয়া যায়।