অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় রক্ত জমাট বাঁধার কারণ খুঁজে পেলেন বিজ্ঞানীরা

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড টিকা নিয়ে কিছুসংখ্যক মানুষের রক্ত জমাট বাঁধার যে বিরল উপসর্গ দেখা গিয়েছিল, তার কারণ খুঁজে পাওয়া গেছে বলে ধারণা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Dec 2021, 06:14 PM
Updated : 2 Dec 2021, 06:14 PM

যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ এবং যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। তারা দেখিয়েছেন, কীভাবে রক্তের একটি প্রোটিন টিকার মূল উপাদানের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং এর কারণে রক্ত জমাট বেঁধে যায়।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, টিকা নেওয়ার পর চেইন বিক্রিয়া শুরু হয় যার সঙ্গে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাও জড়িয়ে পড়ে। কীভাবে রক্ত জমাট বাঁধে সে সম্পর্কে কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা সবিস্তারে তুলে ধরেছে বিবিসি। বলা হয়েছে;

 * সাধারন ঠান্ডাজনিত রোগের ভাইরাসের সবচেয়ে দুর্বল সংস্করণের সঙ্গে করোনাভাইরাসের জিনগত উপাদান মিশিয়ে তৈরি করা হয়েছে টিকা।

 * সাধারণত মাংসপেশীতে টিকা দেওয়া হয়। কিন্তু অনেক সময় টিকাটি রক্তপ্রবাহের সঙ্গে সরাসরি মিশে যায়।

 *এর ফলে টিকার উপাদান রক্তের একটি প্রোটিন ‘প্লাটিলেট ফ্যাক্টর-৪’ কে আকৃষ্ট করতে পারে।

 * বিরল কিছু ক্ষেত্রে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভাইরাসের সঙ্গে প্লাটিলেট ফ্যাক্টর-৪ কে গুলিয়ে ফেলে এবং একে আক্রমণ করার জন্য অ্যান্টিবডি নিঃসরণ করে।

 * আর তখনই এই অ্যান্টিবডি এবং প্লাটিলেট ফ্যাক্টর-৪ একসঙ্গে গুচ্ছাকার হয়ে রক্ত জমাট বেঁধে যায়।

বিজ্ঞানীদের এই দলের গবেষণায় অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিজ্ঞানীরাও যোগ দিয়েছিলেন। তবে অ্যাস্ট্রাজেনেকার এক মুখপাত্র জোর দিয়ে বলেছেন, টিকা নিয়ে রক্ত জমাট বাঁধার চাইতে কোভিড সংক্রমণ থেকেই রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাবনা বেশি। কিন্তু সেটি ঘটার কারণ কী সে সম্পর্কে পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা এখনও পাওয়া যায়নি।

অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় প্রায় ১০ লাখ মানুষের প্রাণ বেঁচেছে বলেই ধারণা করা হয়। কিন্তু তারপরও এ টিকা নিয়ে কিছু মানুষের রক্তজমাট বাঁধার ঘটনা নিয়ে বিশ্বে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছিল।

যুক্তরাজ্যে ৪০ বছরের নীচের বয়সের মানুষদের জন্য এই টিকার একটি বিকল্প চিকিৎসা দেওয়ার প্রস্তাব উঠেছিল। সেইসঙ্গে রক্ত জমাট বাঁধার কারণ কী এবং কীভাবে তা ঠেকানো যায় নিয়েও বৈজ্ঞানিকভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখার চেষ্টা শুরু হয়।

যুক্তরাজ্য সরকার রক্ত জমাট বাঁধার কারণ খুঁজে বের করতে কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের জরুরি তহবিল সহায়তাও দিয়েছিল।