অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা হচ্ছে, জড়িত রাশিয়ানরা: অভিযোগ ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্টের

ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভ্লদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার ‘প্রতিনিধিরা’ ডিসেম্বরের শুরুর দিকে তার নেতৃত্বাধীন সরকারকে ফেলে দেওয়ার একটি পরিকল্পনা আঁটছে বলে জানতে পেরেছেন তিনি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Nov 2021, 08:48 AM
Updated : 27 Nov 2021, 09:01 AM

দেশটির সীমান্তে রাশিয়ার ব্যাপক সৈন্য সমাবেশকে কেন্দ্র করে বাড়তে থাকা উত্তেজনার মধ্যে শুক্রবার তিনি এ অভিযোগ করেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

জেলেনস্কি বলেছেন, যে অডিও রেকর্ডের ভিত্তিতে তিনি অভ্যুত্থান পরিকল্পনার বিষয়টি জানতে পেরেছেন, সেই রেকর্ডিংগুলোতে ইউক্রেইনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি রিনাত আখমেতভের নামও এসেছে।

আখমেতভ পরে এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্টের বক্তব্যকে ‘নির্জলা মিথ্যা’ অ্যাখ্যা দিয়ে অভ্যুত্থান পরিকল্পনায় তার সম্পৃক্ততার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।

জেলেনস্কি তার অভিযোগে সরাসরি মস্কোর নাম না নিলেও ক্রেমলিনের এক মুখপাত্র বলেছেন, ইউক্রেইনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি জড়িয়ে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা রাশিয়ার নেই।

সীমান্তে রুশ সৈন্য সমাবেশকে ঘিরে ইউক্রেইন এবং এর পশ্চিমা মিত্রদের উদ্বেগকেও মস্কো উড়িয়ে দিয়েছে।

শুক্রবার নেটোর সেক্রেটারি জেনারেল জেনস স্টলটেনবার্গ রাশিয়াকে সতর্ক করে বলেছেন, ইউক্রেইনের ওপর বল প্রয়োগ করলে মস্কোকে ‘চড়া মূল্য দিতে হবে’। তবে কী ধরনের মূল্য দিতে হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।

জেলেনস্কি রাশিয়ার দিক থেকে আসা ‘খুবই বিপজ্জনক, উসকানিমূলক কথাবার্তার’ নিন্দা জানিয়েছেন।

“উত্তেজনা যে আরও বাড়বে, এটা তার একটা সংকেত। যুদ্ধ বেধে যেতে পারে- এই হুমকি বিদ্যমান। আমরা যে কোনো ধরনের উত্তেজনাকর পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত,” বলেছেন তিনি।

বিবিসি জানিয়েছে, রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বড় অংশ এখনও ক্রিমিয়ায় অবস্থান করছে; ২০১৪ সালের মার্চে তারা ইউক্রেইনের কাছ থেকে এই এলাকাটি দখলে নিয়েছিল। সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলীয় দনবাস অঞ্চলের কাছেও তাদের ব্যাপক সৈন্য সমাবেশ দেখা যাচ্ছে। দনবাসের বেশিরভাগ অংশই রুশ মদতপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে।

“১ ডিসেম্বরে অভ্যুত্থান হবে এমন তথ্য পেয়েছি আমি,” শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট।

অভ্যুত্থান পরিকল্পনাকারী হিসেবে রুশ ‘প্রতিনিধিদের’ কথা বললেও তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেননি তিনি। 

জেলেনস্কি জানান, হাতে আসা অডিও রেকর্ডগুলোতে তার বিরোধী হিসেবে পরিচিত আখমেতভের নামও এসেছে।

“তাকে ইউক্রেইন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে টেনে নামানো হচ্ছে,” বলেছেন তিনি।

আখমেতভের আশপাশের লোকজন যে তাকে অভ্যুত্থান পরিকল্পনায় জড়াতে চায় সেই বিষয়ে ধনী এই ব্যবসায়ী অবগত কিনা তা নিশ্চিত নন না বলেও জানান ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট।

পরে দেওয়া বিবৃতিতে প্রেসিডেন্টের অভিযোগকে খারিজ করে দিয়ে আখমেতভ বলেছেন, এমন মিথ্যা প্রচারে তিনি ক্ষুব্ধ।

“আগেও আমার অবস্থান স্বাধীন, গণতান্ত্রিক ও অখণ্ড ইউক্রেইনের (যার মধ্যে ক্রিমিয়া এবং আমার এলাকা দনবাসও আছে) পক্ষে ছিল, এখনও তাই আছে। আমার কার্যক্রমই তাই বলবে,” ইউক্রেইনের গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলেছেন আখমেতভ।

ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট তার অভিযোগে রাশিয়ার সরকারকে না জড়ালেও ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জেলেনস্কির অভ্যুত্থান পরিকল্পনা নিয়ে অভিযোগের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন, রাশিয়া কখনোই এ ধরনের কিছু করে না।