যুক্তরাষ্ট্রের `গণতন্ত্রের জন্য সম্মেলনে' আমন্ত্রণ পেল তাইওয়ান

যুক্তরাষ্ট্রে আগামী মাসে হতে যাওয়া ‘গণতন্ত্রের জন্য সম্মেলনে’ তাইওয়ানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2021, 08:03 AM
Updated : 24 Nov 2021, 08:03 AM

মঙ্গলবার আমন্ত্রিত দেশগুলোর যে তালিকা প্রকাশ করেছে তারা, সেখানে তাইওয়ানের নাম দেখা গেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ওয়াশিংটনের এ পদক্ষেপ চীনকে আরও ক্ষুব্ধ করে তুলবে বলে মনে করা হচ্ছে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পরিচালিত দ্বীপ তাইওয়ানকে চীন নিজেদের বিচ্ছিন্ন প্রদেশ হিসেবে দেখে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নিজের প্রথম পররাষ্ট্র নীতি সংক্রান্ত ভাষণে বাইডেন বলেছিলেন, তিনি চীন ও রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন কর্তৃত্ববাদী শক্তিগুলোর মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রকে বৈশ্বিক নেতৃত্বের আসনে নিয়ে যেতে চান।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের চাওয়া অনুযায়ী আগামী মাসে হতে যাওয়া এ ধরনের প্রথম সম্মেলনটি একই সঙ্গে তার জন্য একটি বড় পরীক্ষাও।

রয়টার্স জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন অধিকার ও স্বাধীনতার ক্ষয় এবং গণতান্ত্রিক পশ্চাদপসরণ ঠেকাতে সহায়তার লক্ষ্যে ৯ ও ১০ ডিসেম্বেরের এ ভার্চুয়াল সম্মেলনে আমন্ত্রিত ১১০টি দেশের মধ্যে চীন ও রাশিয়া নেই।

এমন এক সময়ে তাইওয়ান যুক্তরাষ্ট্রের আয়োজিত এ সম্মেলনে আমন্ত্রণ পেল যখন চীন স্বশাসিত দ্বীপটির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন বা সীমিত করতে বিভিন্ন দেশের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। বেইজিং চায় না, কোনো দেশ তাইওয়ানকে রাষ্ট্রের মর্যাদা দিক।

আর স্বশাসিত তাইওয়ানের ভাষ্য, তাদের নিয়ে কথা বলার কোনো অধিকার বেইজিংয়ের নেই।

চলতি মাসের শুরুতে বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে হওয়া ভার্চুয়াল বৈঠকেও তাইওয়ান প্রসঙ্গে দুই নেতার অবস্থানে পার্থক্য দেখা গেছে।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, তাইপের বদলে বেইজিংয়ের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক রাখার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে যে ‘এক চীন’ নীতি অনুসরণ করে আসছে বাইডেন তার প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

তবে ‘বিদ্যমান স্থিতাবস্থা পরিবর্তন এবং তাইওয়ান প্রণালীর চারপাশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা ক্ষুণ্নে একতরফা প্রচেষ্টার’ তিনি যে ‘ঘোর বিরোধী’ তাও জানিয়ে দিয়েছেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।

অন্যদিকে শি বলেছেন, তাইওয়ানের যারা স্বাধীনতা চাইছে এবং যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সমর্থকরা ‘আগুন নিয়ে খেলছে’।

বাইডেনের ‘গণতন্ত্রের জন্য সম্মেলন’ আমন্ত্রিত বিশ্বনেতাদের কার্যকর কোনো পদক্ষেপের দিকে ধাবিত করতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো। সম্মেলনে আমন্ত্রিত অনেক দেশের নেতাদের মধ্যেই কর্তৃত্ববাদী প্রবণতা আছে বলে অভিযোগও রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার আমন্ত্রিত দেশগুলোর যে তালিকা প্রকাশ করেছে তাতে ফ্রান্স ও সুইডেনের মতো পরিণত গণতন্ত্রের দেশ যেমন আছে, তেমনি আছে ভারত, ফিলিপিন্স ও পোল্যান্ডের নামও; এ দেশ তিনটিতে গণতন্ত্র ভয়াবহ ঝুঁকিতে আছে বলে মানবাধিকারকর্মীরা বলে আসছেন।

এশিয়ার মধ্যে মার্কিন মিত্র হিসেবে পরিচিত জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া আমন্ত্রণ পেলেও থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম পায়নি। আমন্ত্রণ না পাওয়া দেশের তালিকায় উল্লেখযোগ্য দুটি নাম হচ্ছে মিশর ও নেটো সদস্য তুরস্ক। মধ্যপ্রাচ্য থেকে আমন্ত্রণ পেয়েছে কেবল দুটি দেশ- ইসরায়েল আর ইরাক।