সেনাশাসিত মিয়ানমারে মার্কিন সাংবাদিকের ১১ বছরের কারাদণ্ড

সেনাশাসিত মিয়ানমারের একটি আদালত মার্কিন সাংবাদিক ড্যানি ফেনস্টারকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Nov 2021, 10:13 AM
Updated : 12 Nov 2021, 10:13 AM

ফেনস্টারকে ‘অন্যায়ভাবে’ আটকে রাখার নিন্দা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল; সেই আহ্বান উপেক্ষা করেই শুক্রবার ৩৭ বছর বয়সী এ সাংবাদিককে উসকানি দেওয়া, অভিবাসন আইনের লংঘন ও বেআইনী সংগঠনের সঙ্গে যোগসাজশের দায়ে সাজা দেওয়া হল।

মার্কিন এই সাংবাদিক যে অনলাইন ম্যাগাজিনের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক, সেই ফ্রন্টিয়ার মায়ানমার ফেনস্টারের সাজাকে ‘কঠোর’ অ্যাখ্যা দিয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মিয়ানমারে গত কয়েক বছরের মধ্যে ফেনস্টারই প্রথম বিদেশি সাংবাদিক যাকে কারাদণ্ড দেওয়া হল।

গণতন্ত্রের পথে টালমাটাল পায়ে এগিয়ে যাওয়া দেশটিতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনী নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সুচির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নেয়; এর পর তাদেরকে কয়েক মাস টানা বিক্ষোভ ও ধর্মঘটেরও মুখোমুখি হতে হয়েছে।

শুক্রবারের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমারের প্রধান সম্পাদক থমাস কিন  বলেছেন, “এসব অভিযোগে ড্যানিকে দোষী সাব্যস্ত করার কোনো ভিত্তি নেই। ফ্রন্টিয়ারের সবাই এই রায়ে মনোক্ষুণ্ন, হতাশ। আমরা কেবল চেয়েছিলাম যত দ্রুত সম্ভব ড্যানির মুক্তি, যেন সে তার পরিবারের কাছে ফিরতে পারে।”

চলতি বছরের মে-তে মিয়ানমার ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করার সময় বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার হন ফেনস্টার; ইয়াংগনের কুখ্যাত ইনসেইন কারাগারে রাখা হয় তাকে।

শুক্রবার যে অভিযোগগুলোতে মার্কিন এ সাংবাদিকের সাজা হয়েছে, তার বাইরেও ফেনস্টারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ আইন লংঘন ও সরকার উৎখাতচেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই দুই অভিযোগের প্রত্যেকটিতে তার সর্বোচ্চ ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

মার্কিন সাংবাদিকের সাজা দেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক উপপরিচালক ফিল রবার্টসন বলেছেন, ফেনস্টারকে কারাদণ্ড দিয়ে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা মূলত গণমাধ্যম ও যুক্তরাষ্ট্রকে ‘বার্তা দিয়েছে’।

“বিদেশি এক সাংবাদিককে সাজা দিয়ে তারা দেশি সব সাংবাদিককে ভীত ও স্তম্ভিত করে দিতে চেয়েছে। দ্বিতীয় বার্তাটি আরও কৌশলগত। যুক্তরাষ্ট্রকে বোঝাতে চেয়েছে, তাতমাদাওয়ের (মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী স্থানীয়ভাবে এই নামেই পরিচিত) জেনারেলরা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাকে ভালো চোখে দেখছে না এবং তারা জিম্মি কূটনীতির মাধ্যমে পাল্টা কামড়ও দিতে পারে,” বলেছেন তিনি।