বৃহস্পতিবার সুদানের ক্ষমতাচ্যুত অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়াম সাদিক আল-মাহদির সঙ্গে ফোনে কথা বলে তিনি ওয়াশিংটনের অবস্থান জানান বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
অভ্যুত্থানের পর সামরিক নেতা জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান সার্বভৌম কাউন্সিল এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভেঙে দিয়ে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন।
বুরহান সুদানের সামরিক ও বেসামরিক নেতাদের নিয়ে গঠিত সার্বভৌম কাউন্সিলের প্রধান ছিলেন।
সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদে সোমবার থেকেই আফ্রিকার দেশটিতে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ দেখিয়েছে, তারা বেসামরিক নেতৃত্বের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে একাধিক প্রাণও ঝরেছে।
ব্লিনকেন টুইটারে বলেছেন, মারিয়াম সাদিক আল-মাহদির সঙ্গে ফোনালাপে তারা দুজন সুদানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েমের লক্ষ্যে বেসামরিক নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ফিরিয়ে আনতে দেশটির জনগণের যে চাওয়া তাতে যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের সহযোগিতা করতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে ২০১৯ সালে সরিয়ে দেওয়ার পর সামরিক বাহিনী ও বেসামরিক গোষ্ঠীগুলোর নড়বড়ে এক ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তির মধ্য দিয়ে গত দুই বছর ধরে পরিচালিত হয়ে আসছিল পূর্ব আফ্রিকার দেশটি।
সেপ্টেম্বরে বশিরের অনুগত সেনাদের ব্যর্থ এক অভ্যুত্থান চেষ্টার পর থেকে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বেসামরিক নিয়ন্ত্রিত জোট ফোর্সেস অব ফিডম অ্যান্ড চেইঞ্জের (এফএফসি) সংস্কার এবং মন্ত্রিসভায় রদবদলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। অন্যদিকে, বেসামরিক নেতারা এ দাবিগুলোকে দেখে আসছিলেন সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের ‘ক্ষমতা দখলের উচ্চাকাঙ্ক্ষা’ হিসেবে।
জেনারেল বুরহান বলেছেন, দেশকে গৃহযুদ্ধের হাত থেকে রক্ষা করতেই সামরিক বাহিনীকে ক্ষমতা নিতে হয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৩ সালের জুলাইয়ে নির্বাচন করার পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছিল; সুদানে সেই সময়েই নির্বাচন হবে এবং ক্ষমতা বেসামরিক নেতৃত্বের হাতেই তুলে দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন বুরহান।
যদিও তার কথায় আস্থা রাখতে পারছে না আন্তর্জাতিক মহল। এরই মধ্যে অনেক দেশ ও সংস্থা সুদানে সামরিক অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) জোটে সুদানের সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে, দেশটিতে চলমান বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য অর্থ ছাড় এবং নতুন প্রকল্প অনুমোদন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।