ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণের পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা যুক্তরাষ্ট্রের

দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি সম্প্রসারণে ইসরায়েলের পরিকল্পনার কড়া সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Oct 2021, 11:46 AM
Updated : 27 Oct 2021, 11:46 AM

ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, এ কারণে যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ়ভাবে এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে, মঙ্গলবার বলেছে তারা।

এটিই এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে জো বাইডেন প্রশাসনের করা সবচেয়ে ঝাঁজাল প্রতিক্রিয়া, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

“ইসরায়েলের সরকার আগামীকাল বুধবার হাজারের বেশি ঘর স্থাপনের কাজ এগিয়ে নেওয়ার যে পরিকল্পনা করেছে, তাতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, এসব ঘরের অনেকগুলোই পশ্চিম তীরের বেশ ভেতরে হবে।

“আমরা এই বসতি সম্প্রসারণের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি; এই সম্প্রসারণ উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার সঙ্গে পুরোপুরি অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং এটি দুই রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে,” মঙ্গলবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস।

এ প্রসঙ্গে ওয়াশিংটনে অবস্থিত ইসরায়েল দূতাবাসের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলেও তাৎক্ষণিকভাবে তা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

রোববার ইসরায়েল দখলকৃত পশ্চিম তীরে নতুন এক হাজার ৩০০ ঘর নির্মাণে দরপত্র দেয়; কর্তৃপক্ষ সেখানে আরও ৩ হাজার ঘর বানানোর প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা করবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

ওয়াশিংটন ধারাবাহিকভাবে বসতি সম্প্রসারণ বিষয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি সরাসরি ইসরায়েলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে আসছে, বলেছেন প্রাইস।

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত শান্তি আলোচনা ২০১৪ সালে ভেস্তে গিয়েছিল। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ এখনো পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বসতি স্থাপনকে ‘অবৈধ’ হিসেবেই দেখে।

রয়টার্স লিখেছে, যেসব বিষয় নিয়ে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র মতবিরোধ দৃশ্যমান, তার একটি হচ্ছে তেল আবিবের এই বসতি স্থাপনকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ড।

ইরান পরমাণু চুক্তি পুনর্জীবিত করা নিয়েও ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান দুই বিপরীত শিবিরে।

চলতি বছর বাইডেন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মার্কিন কর্মকর্তারা বারবারই ফিলিস্তিন তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রে যে যে এলাকা থাকতে পারে বলে দাবি জানিয়ে আসছে, সেসব এলাকায় ইহুদি বসতি সম্প্রসারণে ওয়াশিংটনের আপত্তির বিষয়টি জোরালভাবে বলে আসছেন।

এ মাসের শুরুতে বাইডেন প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছিলেন, ‘উসকানিমূলক’ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে এবং ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে দীর্ঘ আকাঙ্ক্ষিত দুই রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নের চেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে (বাইডেন) প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে ইসরায়েল অবগত।

ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্কে যা খানিকটা উত্তেজনা রয়েছে, তা কমিয়ে আনার লক্ষ্যেই এ বছরের জুনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া নাফতালি বেনেট এতদিন নতুন বসতি নির্মাণের ঘোষণা দেননি বলে মনে করা হচ্ছে।

তার রোববারের ঘোষণা মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতাকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে বলেও অনেকে আশঙ্কা করছেন।