তীব্র খাদ্য সংকটে আফগানিস্তান: জাতিসংঘ

শিগগিরই জরুরি ব্যবস্থা না নেওয়া হলে এবারের শীতে লাখ লাখ আফগানকে অনাহারে থাকতে হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Oct 2021, 02:18 PM
Updated : 25 Oct 2021, 02:18 PM

সংস্থাটি জানায়, আফগানিস্তানের মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেক অর্থাৎ, প্রায় ২ কোটি ২৮ লাখ মানুষ ভয়াবহ খাদ্য সংকটে পড়তে চলেছেন। তাছাড়া, ৫ বছরের কম বয়সী ৩২ লাখ শিশু পুষ্টিহীনতায় ভুগতে পারে।

ডব্লিউএফপি’র নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বিসলে বলেন, “আফগানিস্তান এখন বিশ্বে ভয়াবহ মানবিক সংকটে ভুগতে থাকা দেশগুলোর অন্যতম। আমরা বিপর্যয় ঘনিয়ে আসার ক্ষণ গুনছি।”

গত আগস্টে তালেবান আফগানিস্তানের দখল নেয়। এর ফলে বিদেশি সাহায্য নির্ভর আফগানিস্তানের ভঙ্গুর অর্থনীতি আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। আফগানিস্তানে চালু থাকা পশ্চিমা দেশগুলোর ত্রাণ প্রকল্প স্থগিত হয় এবং বিশ্ব ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলও (আইএমএফ) অর্থ দেওয়া বন্ধ করে দেয়।

কোনও দেশের জিডিপির ১০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি বৈদেশিক ত্রাণ থেকে আসলে সে দেশটিকে ত্রাণনির্ভর বলে বিবেচনা করা হয়। বিশ্ব ব্যাংকের হিসাবমতে, আফগানিস্তানের জিডিপির ৪০ শতাংশ আন্তর্জাতিক ত্রাণ নির্ভর।

ডব্লিউএফপি সতর্ক করে বলেছে, আসন্ন শীতের মৌসুম মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল আফগানদের আরও বিচ্ছিন্নতার ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। আর এই প্রথমবারের মতো আফগানিস্তানের শহর অঞ্চলের বাসিন্দারা পল্লী অঞ্চলের বাসিন্দাদের মত খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) পরিচালক কিউইউ ডংইউ বলেন, “শীতে আফগানিস্তানে একটি বড় অংশ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আগেই কার্যকরভাবে খাদ্য সরবরাহ করা জরুরি। তা না হলে কৃষক, নারী, শিশু ও বয়স্কসহ লাখো মানুষ প্রচণ্ড শীতের মধ্যে অনাহারে থাকবে।”

এর আগে সেপ্টেম্বরে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ‘ডব্লিউএফপি’ সতর্ক করে বলেছিল, কেবল ৫ শতাংশ আফগান পরিবারের কাছে প্রতিদিন খেয়ে বেঁচে থাকার মতো যথেষ্ট খাবারের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু রান্নার তেল ও গমের মতো মৌলিক উপকরণগুলোর দাম আকাশচুম্বী।

অক্টোবরেও সংস্থাটি ইতোপূর্বে সতর্ক করে বলেছিল, ১০ লাখ শিশু ভয়াবহ রকমের পুষ্টিহীনতার শিকার হয়ে মৃত্যুমুখে আছে। তাদের জীবন বাঁচাতে অবিলম্বে জরুরি চিকিৎসা সেবা প্রয়োজন।

সেপ্টেম্বরে জেনেভায় অনুষ্ঠিত একটি সম্মেলনে আফগানদের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ১শ’ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয়, যার এক তৃতীয়াংশ ডব্লিউএফপি’র জন্য বরাদ্দ করা হয়।

কিন্তু সোমবার ডব্লিউএফপি জানিয়েছে, মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে তাদের মাসে অন্তত ২২ কোটি ডলার প্রয়োজন। বর্তমান প্রতিশ্রুত অর্থকে সমুদ্রে এক ফোঁটা পানির সঙ্গে তুলনা করেছে ডব্লিউএফপি।