তাইওয়ান-চীন পুনরেকত্রীকরণে অঙ্গীকার শি’র

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এক ভাষণে বলেছেন, তাইওয়ানের সঙ্গে পুনরেকত্রীকরণ হতেই হবে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Oct 2021, 09:08 AM
Updated : 9 Oct 2021, 09:08 AM

এই পুনরেকত্রীকরণ শান্তিপূর্ণভাবে হওয়া উচিত মন্তব্য করে কমিউনিস্ট পার্টির এই নেতা তাইওয়ানকে সতর্ক করে আরও বলেছেন, বিচ্ছিন্নতাবাদ মোকাবেলায় চীনা জনগণের ‘গৌরবময় ঐতিহ্য’ আছে।

শি’র বক্তব্যের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় বলেছে, স্বশাসিত দ্বীপের ভবিষ্যৎ কেবল এর জনগণই নির্ধারণ করতে পারে।

শনিবার চীনা প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের সুর তার আগের তাইওয়ান বিষয়ক বক্তব্যের তুলনায় খানিকটা নরম ছিল বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।

তাইওয়ান নিজেদেরকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র দাবি করলেও চীন দ্বীপটিকে দেখে নিজেদের ‘বিচ্ছিন্ন প্রদেশ’ হিসেবে।

পুনরেকত্রীকরণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে বল প্রয়োজনে বল প্রয়োগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়নি বেইজিং।

গত সপ্তাহে তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে চীনের দেড়শ সামরিক বিমানের ‘অনুপ্রবেশের’ পর শি’ তাইওয়ান-চীন পুনরেকত্রীকরণের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করলেন।

চীন থেকে রাজতন্ত্র উৎখাতের ১১০ বছর পূর্তিতে দেওয়া ভাষণে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক শি’কে তাইওয়ান ইস্যুতে আগের তুলনায় সংযত দেখা গেছে। জুলাইয়ে তিনি হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, তাইওয়ান আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা ঘোষণার কোনো ধরনের চেষ্টা করলে তা গুড়িয়ে দেওয়া হবে।

“মাতৃভূমির সঙ্গে (তাইওয়ানের) পুনরেকত্রীকরণে ইতিহাস অর্পিত যে কর্তব্য আছে, তা অবশ্যই শেষ কতে হবে। এবং এটা হতেই হবে,” বলেছেন তিনি।

শি জানান, তিনি চান তাইওয়ান চীনের সঙ্গে হংকংয়ের মতো ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ এই নীতির আওতায় শান্তিপূর্ণ পুনরেকত্রীকরণে রাজি হোক।

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় বলেছে, তাইওয়ানের জনগণের ভাবনা স্পষ্ট, তারা ‘এক দেশ দুই ব্যবস্থা’ প্রত্যাখ্যান করেছে। বেইজিংকে ‘অনুপ্রবেশ, হয়রানি ও ধ্বংসের উসকানিমূলক পদক্ষেপগুলো’ পরিত্যাগ করারও আহ্বান জানিয়েছে তারা।

বিবিসি লিখেছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তাইওয়ান ও চীনের মধ্যে তুমুল উত্তেজনা চললেও পরিস্থিতি এখনও ১৯৯৬ সালের মতো পর্যায়ে পৌঁছায়নি। সেবার চীন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বিঘ্নিত করার চেষ্টায় ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল, সেসময় বেইজিংকে থামাতে ওই অঞ্চলে বিমানবাহী রণতরী মোতায়েন করতে হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রকে।

চীনের সাম্প্রতিক শক্তি প্রদর্শনে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করলেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, চীনা প্রেসিডেন্ট শি ‘তাইওয়ান নিয়ে সমঝোতা’ মেনে চলার ব্যাপারে রাজি হয়েছেন।

ওয়াশিংটন দীর্ঘদিন ধরে যে ‘এক চীন’ নীতি মেনে চলছে, বাইডেন সম্ভবত সেটিকেই ‘তাইওয়ান নিয়ে সমঝোতা’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

ওই ‘এক চীন’ নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে কখনোই আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি; তবে তাইওয়ান রিলেশনস অ্যাক্ট অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র নিয়মিতই তাইপের কাছে অস্ত্র বেচে, আত্মরক্ষার ক্ষেত্রে তাইওয়ানের পাশে থাকার অঙ্গীকারও আছে তাদের।