কাবুলে সরকারি নারী কর্মীদের বাড়িতে থাকার আদেশ তালেবানের

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে নগর প্রশাসনের নারী কর্মীদের বাড়িতে থাকার আদেশ দিয়েছেন সেখানকার নতুন অন্তর্বর্তী তালেবান মেয়র হামদুল্লাহ নোমান।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Sept 2021, 04:54 PM
Updated : 19 Sept 2021, 04:54 PM

নারীদের পদগুলোতে পুরুষ কর্মী না পাওয়া পর্যন্ত তাদেরকে বাড়িতে থাকার আদেশ দিয়ে নোমান বলেন, “নারীদের কাজ কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখা প্রয়োজন মনে করছে তালেবান।”

নারীদের ওপর আফগানিস্তানের নতুন কট্টরপন্থি তালেবান সরকারের বিধিনিষেধ জারির ধারাবাহিকতায় রোববার এ ঘোষণা এল বলে জানিয়েছে বিবিসি।

কাবুলের মেয়র নোমান জানান, রাজধানীর নগর প্রশাসনের সব বিভাগ মিলে প্রায় তিন হাজার কর্মী আছে, যার এক-তৃতীয়াংশই নারী। এদের মধ্যে কিছু নারী কাজ করতে পারবেন।

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “নারীদের পাবলিক টয়লেটগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নারীরাই পালন করতে পারে। পুরুষরা সেখানে যেতে পারে না।”

“কিন্তু আরও পদ আছে যা অন্যরা (পুরুষ) পূরণ করতে পারে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমরা তাদের (নারী) ঘরে থাকতে বলেছি। তাদেরকে বেতন দেওয়া হবে।”

আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের অল্প সময়ের মধ্যেই্ তালেবান জানিয়েছিল, ‘ইসলামি আইন-কাঠামোর মধ্যেই’ নারীদের অধিকারের প্রতি সম্মান দেখানো হবে।

কিন্তু তারা বৈধ ইসলামিক ব্যবস্থার কঠোর রূপ শরিয়া আইনই বাস্তবায়ন করছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে তাদের কাজেকর্মে। ১৯৯০ এর দশকের তালেবান আমলে নারীদের শিক্ষা এবং কাজে যাওয়া দুই-ই নিষিদ্ধ ছিল।

এবার তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর থেকেই বলে আসছে নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত নারীদের ঘরে থাকতে হবে। নবগঠিত পুরুষ সর্বস্ব অন্তর্বর্তী তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে নারী বিক্ষোভও তালেবান যোদ্ধারা কঠোর হাতে দমন করেছে।

তাছাড়া, আফগানিস্তানের নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয় বন্ধ করে দিয়ে সে জায়গায় তালেবান এমন একটি মন্ত্রণালয় চালুর পদক্ষেপ নিয়েছে, যা একসময় কঠোর ধর্মীয় নিয়মকানুন মানতে বাধ্য করত। ওদিকে, শিক্ষাক্ষেত্রে তালেবান শুধু ছাত্রদের জন্য মাধ্যমিক স্কুল খোলার ঘোষণা দিলেও মেয়েদের স্কুল খোলার বিষয়ে কিছু বলেনি।

বিবিসি জানায়, রোববার বন্ধ হয়ে যাওয়া নারী মন্ত্রণালয়ের বাইরে কয়েকজন নারী বিক্ষোভ করেছেন। জনজীবনে নারীদের অংশগ্রহণ করতে দেওয়ার দাবি জানান তারা। আরও কিছু নারী তাদের অধিকারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক নারী বলেন, “আমরা নারী মন্ত্রণালয় বন্ধ হতে দিতে চাই না।” বিক্ষোভকারীদের হাতের একটি ব্যানারে লেখা ছিল, ‘যে সমাজে নারীরা সক্রিয় নয়, সেটি মৃত সমাজ।’