‘ভাইরাসের সঙ্গে বসবাস’ শিখছে অস্ট্রেলিয়ার রাজ্যগুলো, একদিনে শনাক্ত ১৬০৭

করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ডেল্টা ধরনের বিস্তৃতি মোকাবেলায় হিমশিম খাওয়া অস্ট্রেলিয়ায় এবার একদিনে নতুন এক হাজার ৬০৭ কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Sept 2021, 11:17 AM
Updated : 19 Sept 2021, 11:17 AM

পরিস্থিতির কারণে বাধ্য হয়ে দেশটির বিভিন্ন রাজ্য ও অঞ্চল এখন প্রাদুর্ভাব নির্মূলের পরিবর্তে ধীরে ধীরে ভাইরাসের সঙ্গে বসবাসে অভ্যস্ত হওয়ার চেষ্টা করছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

অস্ট্রেলিয়ার মোট জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশের বাস যে রাজ্যে, সেই ভিক্টোরিয়া রোববার নতুন ৫০৭ কোভিড রোগী পাওয়ার কথা জানিয়েছে।

রাজ্যটির প্রধানমন্ত্রী ডেনিয়েল অ্যান্ড্রুজ জানিয়েছেন, শনাক্ত রোগী পাওয়া যাক বা না যাক, রাজ্যের ১৬ ও তার বেশি বয়সীদের মধ্যে ৭০ শতাংশের টিকাদান হলেই কয়েক সপ্তাহব্যাপী চলা লকডাউনের ইতি ঘটবে।

২৬ অক্টোবর নাগাদ ভিক্টোরিয়া এ লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

রাজ্যটিতে এখন পর্যন্ত ১৬ বা তার বেশি বয়সীদের ৪৩ শতাংশ টিকার সব ডোজ পেয়েছেন। পুরো অস্ট্রেলিয়ায় এ সংখ্যা ৪৬ শতাংশের খানিকটা বেশি।

“সাবধানতার সঙ্গে করবো, কিন্তু ভুল করা যাবে না, আমাদেরকে এটি (ভিক্টোরিয়া) খুলে দিতে হবে। আর কোনো বিকল্প নেই। লকডাউন দেওয়া হয়েছে যেন এই সময়ের মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশকে টিকা দেওয়া যায়,” বলেছেন তিনি।

লকডাউন তুলে নিলেও সামাজিক দূরত্ব সংক্রান্ত বেশিরভাগ বিধিনিষেধ বহাল থাকবে; দোকানপাট ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশাধিকার সীমিত থাকবে। তবে মানুষ কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই ঘর থেকে বের হতে পারবেন, বলেছেন ভিক্টোরিয়ার এ প্রধানমন্ত্রী।

রাজ্যে টিকা নেওয়ার উপযুক্তদের মধ্যে ৮০ শতাংশকে ২ নভেম্বর মেলবোর্ন কাপের আগেই টিকাদানের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। মেলবোর্ন কাপ অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা।

কেন্দ্রীয় সরকারের ছক অনুযায়ীই ভিক্টোরিয়ার নতুন এ কোভিড মোকাবেলা পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ৭০ শতাংশের টিকাদান সম্পন্ন হলে লকডাউন তুলে নেওয়া এবং ক্রমান্বয়ে ৮০ শতাংশ সীমান্ত খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যও কাছাকাছি ধরনের একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে জনবহুল এ রাজ্যে রোববার নতুন ১০৮৩ কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে।

এদিন থেকে রাজ্যটি জমায়েতের ওপর দেওয়া বেশকিছু বিধিনিষেধ শিথিলও করেছে। রাজ্যের টিকা পাওয়ার উপযুক্তদের মধ্যে ৫২ শতাংশের টিকাদান শেষ হয়েছে।

লকডাউন, সীমান্ত বন্ধ এবং কঠোর সব বিধিনিষেধের মাধ্যমে গত বছর অস্ট্রেলিয়া কোভিড-১৯ এর একাধিক প্রাদুর্ভাব নির্মূল করতে সক্ষম হলেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশটি ডেল্টার প্রাদুর্ভাব নির্মূল ‘সম্ভব নাও হতে পারে’ বলে স্বীকার করে নিয়েছে।

দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত হওয়া কোভিড রোগীর সংখ্যা ৮৪ হাজারের সামান্য বেশি, এর দুই-তৃতীয়াংশই মিলেছে চলতি বছর। জুনের পর থেকে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি মোকাবেলায় কর্তৃপক্ষকে খাবি খেতে হচ্ছে।

করোনাভাইরাস এখন পর্যন্ত দেশটিতে এক হাজার ১৬২ জনের প্রাণও কেড়ে নিয়েছে।