দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল উত্তর কোরিয়া

পূর্ব উপকূলের সমুদ্রে দুইটি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী একথা জানিয়েছে। ছয়মাসের মধ্যে এটিই উত্তর কোরিয়ার প্রথম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Sept 2021, 11:31 AM
Updated : 15 Sept 2021, 11:32 AM

জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে উত্তর কোরিয়া এই পরীক্ষা চালিয়েছে। উত্তর কোরিয়াকে নিরস্ত্রীকরণ আলোচনা শুরু করানোর চেষ্টায় দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের বৈঠক চলার মাঝেই বুধবার এ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো হল বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এর দুই দিন আগেই উত্তর কোরিয়া দূর পাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সম্ভবত পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম।

পরপর এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা থেকে এই ইঙ্গিতই মিলছে যে, উত্তর কোরিয়া অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধে্যও অস্ত্র উন্নয়ন করে যাচ্ছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ (জেসিএস) বলেছেন, বুধবারের পরীক্ষায় স্বল্প-পাল্লার দু’টি ক্ষেপণাস্ত্র উত্তর কোরিয়ার মধ্যাঞ্চলীয় একটি দ্বীপ থেকে ছোড়া হয় এবং তা প্রায় ৮০০ কিমি পথ পাড়ি দেয়। ক্ষেপণাস্ত্র দুটি পূর্বদিকে জাপান সাগরে উড়ে যায়।

 দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো কী ধরনের তা বিশ্লেষণ করে দেখছে বলে জানিয়েছে (জেসিএস)।  বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তর কোরিয়া প্রযুক্তি উন্নয়নে এমন পরীক্ষা চালায় এবং একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় সুবিধা লাভের চেষ্টা করে।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিদি সুগা উত্তর কোরিয়ার এই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়াকে গর্হিত কাজ বলে এর নিন্দা করেছেন এবং এ পদক্ষেপকে আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বর্ণনা করেছেন।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ করা না হলেও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো তুলনামূলকভাবে বড় ও শক্তিশালী বোমা বহনে সক্ষম এবং দ্রুত অনেক বেশি দূরে যেতে পারে। তাই এ ক্ষেপণস্ত্রকে বেশি বিপজ্জনক বলে মনে করা হয়।

উত্তর কোরিয়া খাদ্য ঘাটতি ও তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে আছে, এর মধ্যেও তারা কীভাবে অস্ত্র উৎপাদন করতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশটি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে তারা ঘনিষ্ঠ মিত্র চীনের সঙ্গেও অধিকাংশ বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে।

বুধবার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিউলে দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক করছেন। তাদের বৈঠকের এজেন্ডার মধ্যে উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র কর্মসূচী ও পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে স্থবির হয়ে থাকা আলোচনার বিষয়গুলো থাকতে পারে।

চলতি বছরের মার্চে উত্তর কোরিয়া নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করেছিল। তখন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল।

আর গত মাসে জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থা বলেছে, উত্তর কোরিয়া একটি পারমাণবিক চুল্লি ফের চালু করেছে বলে মনে হচ্ছে, যেটি পারমাণবিক অস্ত্রের জন্য প্লুটোনিয়াম উৎপাদন করতে পারবে। পিয়ংইয়ংয়ের এ পদক্ষেপকে ‘গভীর উদ্বেগজনক’’ বলে বর্ণনা করেছে সংস্থাটি।