কাবুল দখলের তিন সপ্তাহ পর মঙ্গলবার তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের অন্তর্বর্তী সরকারের পদধারীদের নাম ঘোষণা করেন।
তাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা সিরাজউদ্দিনের নাম ঘোষণা করা হয় বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর খবর।
সিএনএন লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় থাকা হাক্কানি নেটওয়ার্কের সঙ্গে আল কায়দার যোগসাজশ রয়েছে।
সংগঠনটির বর্তমান প্রধান সিরাজউদ্দিন হাক্কানির নাম এফবিআইর ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় মঙ্গলবারও দেখা গেছে।
তাতে বলা হয়েছে, ২০০৮ সালে কাবুলে হোটেলে বোমা হামলা চালিয়ে ছয়জন আমেরিকানকে হত্যার অভিযোগে তাকে খোঁজা হচ্ছে।
ওই বছর তৎকালীন আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগও রয়েছে সিরাজউদ্দিন হাক্কানির বিরুদ্ধে।
হাক্কানিকে ধরিয়ে দিলে কিংবা তাকে গ্রেপ্তারে তথ্য দিলে ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার মিলবে বলে এফবিআইর ওয়েবসাইটে ঘোষণা দেওয়া আছে।
সোভিয়েতবিরোধী লড়াইয়ের ‘মুজাহিদ’ নেতা জালালুদ্দিন হাক্কানীর ছেলে হলেন সিরাজউদ্দিন হাক্কানি। তিনি এখন হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান, আবার তালেবানের উপপ্রধান।
বলা হয়, আফগানিস্তানে সোভিয়েত সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এই হাক্কানি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের মদদ ছিল। সোভিয়েত বাহিনীর উপর দুর্ধর্ষ নানা হামলায় জড়িয়ে আছে এই উপদলের নাম। পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন নেটোবাহিনীর উপরও সমানে হামলা চালিয়েছে হাক্কানি নেটওয়ার্ক।
তালেবানের নতুন সরকারে যিনি প্রধান হচ্ছেন, সেই মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দের নামও জাতিসংঘের সন্ত্রাসী তালিকায় রয়েছে বলে এনডিটিভি জানিয়েছে।
মোল্লা হাসান তালেবানের ১৯৯৬ সালের সরকারেও মন্ত্রী ছিলেন। দলে তিনি ধর্মীয় নেতা হিসেবেই বেশি পরিচিত।
তালেবানের শীর্ষ নেতা শেখ হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত মোল্লা হাসান।
মোল্লা হাসানের জন্ম কান্দাহারে, যেখানে তালেবানের উৎপত্তি।
ওয়াশিংটনের সঙ্গে তালেবানের চুক্তির পর যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যরা আফগানিস্তান ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুই দশক বাদে ক্ষমতার দখল নেয় কট্টর ইসলামী গোষ্ঠীটি।
নতুন সরকারের ঘোষণা দিয়ে তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমরা কোনো উপজাতীয় গোষ্ঠী নই।”
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, সব দেশই আমাদের এই সরকারকে স্বীকৃতি দেবে।”
আরও খবর