উগ্র জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ সন্ন্যাসীকে ছেড়ে দিল মিয়ানমারের জান্তা

উগ্র জাতীয়তাবাদী ও মুসলিমবিরোধী উল্টাপাল্টা কথাবার্তার জন্য পরিচিত বিতর্কিত এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে থাকা সব অভিযোগ তুলে নিয়ে তাকে মুক্তি দিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Sept 2021, 11:58 AM
Updated : 7 Sept 2021, 11:58 AM

বেসামরিক সরকারের আমলে আসিন অয়ারাথু নামের ওই সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছিল।

মুসলমান বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের টার্গেট করে দেওয়া ভাষণের জন্য সামরিক বাহিনীর কট্টর সমর্থক অয়ারাথু অনেকের কাছেই ‘বৌদ্ধ বিন লাদেন’ নামেও পরিচিত।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাকে সামরিক বাহিনীর সমর্থনে হওয়া বিভিন্ন মিছিল-সমাবেশে দেখা যাওয়ার পাশাপাশি উগ্র জাতীয়তাবাদী ভাষণ দিতে এবং অং সান সু চি ও তার সরকারের কড়া সমালোচনা করতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

সরকারের বিরুদ্ধে ‘ঘৃণা ও অবমাননা’ উসকে দেওয়ার অভিযোগে ২০১৯ সালে অয়ারাথু আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত হন। তারপর থেকে দীর্ঘদিন তিনি পলাতক ছিলেন। গত বছরের নভেম্বরে বৌদ্ধ এ সন্ত্রাসী কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করে বিচার শুরুর অপেক্ষায় দিন গুনছিলেন।

সোমবার সামরিক জান্তা অয়ারাথুর বিরুদ্ধে থাকা সব অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেয়; তবে কি কারণে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানানো হয়নি।

অয়ারাথু সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে চেয়েছেন বলেও জানিয়েছে সেনাসরকার।

রয়টার্স উগ্র জাতীয়তাবাদী এ বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে কিছু জানতে পারেনি।

অয়ারাথুর বিরুদ্ধে মিয়ানমারে মুসলমান ও রোহিঙ্গাদের ওপর হামলায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তিনি ছিলেন দেশটির কট্টরপন্থিদের ‘৯৬৯ আন্দোলনের’ অন্যতম প্রভাবশালী মুখ।

কট্টরপন্থি বৌদ্ধদের এ আন্দোলনে নিজ ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে বিয়ে, কেনাকাটা ও সম্পত্তি বেচাকেনায় উৎসাহ দেওয়া হতো।

জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা অবস্থায় অনলাইনে কয়েক লাখ অনুসারী অয়ারাথুর ধর্ম বিষয়ক বক্তৃতা শুনেছেন; তার সমাবেশগুলোতেও ছিল লাখো মানুষের উপস্থিতি।

২০১২ সালে রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিম ও বৌদ্ধদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর থেকে তার বক্তৃতা-বিবৃতি সবার মনোযোগ কাড়া শুরু করে। পরের বছর টাইম ম্যাগাজিন তাদের ফ্রন্ট কভারে ‘বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর মুখ?’ শিরোনামের সঙ্গে অয়ারাথুর ছবি জুড়ে দেয়।

২০১৭ সালে মিয়ানমারের বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ পরিষদ অয়ারাথুর ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে এক বছরের নিষেধাজ্ঞা দেন।

বিদ্বেষমূলক কথাবার্তার জন্য ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালে তার পেইজ প্ল্যাটফর্ম থেকে মুছে দেয়।