‘সবাইকে নিয়ে’ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গড়ার চিন্তা তালেবানের

চলতি মাসের শুরুতে পশ্চিমা সমর্থিত প্রশাসনকে হটিয়ে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া তালেবান জানিয়েছে, তারা সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করেই একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার বানানোর পরিকল্পনা করছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 August 2021, 05:58 AM
Updated : 28 August 2021, 05:58 AM

তত্ত্বাবধায়ক সরকারে আফগানিস্তানের সব জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা থাকবেন বলে কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠীটির একাধিক নেতা আশ্বাস দিয়েছেন।

যদিও নতুন এ সরকারের মেয়াদ কতদিনের হতে পারে, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে আল জাজিরা। 

জাতিগত বৈচিত্র্যই আফগানিস্তানের রাজনীতি ও দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সংঘাতের কেন্দ্রে অবস্থান করছে; ৪ কোটি জনসংখ্যার দেশটির ৪২ শতাংশ পশতুন, তারাই দেশটির সবচেয়ে বড় জাতিগোষ্ঠী।

প্রধানত সুন্নি মুসলিম এই সম্প্রদায়ের লোকজন পশতু ভাষাভাষী, অষ্টাদশ শতক থেকে আফগান রাজনীতিতে তাদের প্রভাব সবচেয়ে বেশি।

তালেবান নেতারা জানিয়েছেন, তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারে একজন ‘আমির উল মোমিনীন’ থাকবে, যিনি ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তানকে নেতৃত্ব দেবেন। তালেবানরা আফগানিস্তানকে এ নামেই ডাকে।

ভবিষ্যৎ সরকারের ধরন কি হবে, এবং কারা কারা মন্ত্রী হবেন তা ঠিক করতে একটি সুপ্রিম লিডারশিপ কাউন্সিল গঠিত হয়েছে; তারাই আইন, স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, অর্থ, তথ্য ও কাবুল বিষয়ক বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বেছে নেবেন।

সরকার গঠনের লক্ষ্যে তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা বারাদার এখন আফগানিস্তানের রাজধানীতে অবস্থান করছেন। গোষ্ঠীটির প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুবও কান্দাহার থেকেনি কাবুলে এসেছেন বলে জানিয়েছেন তালেবান নেতারা। সরকার গঠন নিয়ে এ দু’জনের মতামতের গুরুত্ব বেশি থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠীটি একাধিক নেতা জানিয়েছেন, তারা নতুন সরকারে তাজিক ও উজবেক ‍উপজাতি নেতাদের সন্তানসহ অনেক নতুন মুখ সামনে নিয়ে আসতে আগ্রহী।

যুক্তরাষ্ট্র তাদের সমর্থিত আগের সরকারগুলোর প্রতিনিধিদের রাখতেও চাপ দিচ্ছে, যে কারণে পরবর্তী প্রশাসনেও আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই ও হাই কাউন্সিল ফর ন্যাশনল রিকনসিলিয়েশনের সাবেক প্রধান আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহকেও দেখা যেতে পারে, বলেছেন তারা।

২০২০ সালে দোহায় করা চুক্তি মেনে তালেবান আফগানিস্তানের ভূখণ্ড ব্যবহার করে অন্য কোনো দেশে সন্ত্রাসী হামলার সুযোগ না দিতেও বদ্ধপরিকর, বলেছেন গোষ্ঠীটির এক নেতা।

আগের প্রশাসনে নারীরা যেভাবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছে নতুন সরকারও তা অব্যাহত রাখবে; বিশেষ করে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে নারীদের কাজ করার সুযোগ বেশি থাকবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ওই নেতা।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই ও সমাজে উদাহরণ সৃষ্টিতে স্থানীয় পর্যায়ে বসানো হবে বিশেষ আদালত, বলেছেন তিনি।